
ছবিঃ সংগৃহীত
অনেকেই আছেন যারা মুখোমুখি কথোপকথনের সময় চোখে চোখ রেখে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করেন। এটি কোনো আচরণগত খামতি নয়—বরং এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে অতীতের গভীর অভিজ্ঞতা। শিশু ও কৈশোরের নানা মানসিক ঘটনা প্রভাব ফেলে বড় হওয়ার পর তাদের ব্যবহারে। নিচে এমন ৭টি সাধারণ কারণ তুলে ধরা হলো, যা এ ধরনের আচরণের পেছনে ভূমিকা রাখে।
শৈশবে অতিরিক্ত সমালোচনার শিকার হওয়া
বারবার বকা খাওয়া বা তিরস্কার পেলে শিশুরা চোখে চোখ রেখে কথা বলতে ভয় পায়। তারা শেখে, চোখে তাকানো মানেই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া, তাই তারা তা এড়িয়ে চলে।
বুলিং বা সহপাঠীদের দ্বারা নির্যাতনের অভিজ্ঞতা
যারা ছোটবেলায় স্কুল বা আশেপাশে অন্যদের দ্বারা বুলিংয়ের শিকার হয়েছে, তারা চোখে চোখ রেখে কথা বললে যেন নিজেদের আরও বেশি দুর্বল মনে করে। এটি এক ধরনের আত্মরক্ষামূলক আচরণে পরিণত হয়।
সংবেদনশীলতা বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার
কিছু মানুষের জন্য চোখে চোখ রাখা সত্যিই শারীরিক ও মানসিকভাবে অস্বস্তিকর। অটিজম বা সেন্সরি প্রসেসিং ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা তা এড়াতে স্বাভাবিকভাবেই বাধ্য হন।
প্রাকৃতিক লাজুক স্বভাব
অনেকের শৈশব থেকেই লাজুকতা ছিলো—অপরিচিত পরিবেশে গুটিয়ে যাওয়া, মানুষের চোখে চোখ না রাখা তাদের সহজাত। এই স্বভাব পরিণত বয়সেও রয়ে যায়।
ঘনিষ্ঠতার ভয়
চোখে চোখ রাখা মানে অনেক সময় নিজেকে উন্মুক্ত করে দেওয়া। যারা ছোটবেলা থেকে নিজের অনুভূতি চেপে রাখার শিক্ষা পেয়েছে, তাদের জন্য এটা অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়ায়।
আত্মবিশ্বাসের অভাব
নিজেকে ছোট বা অযোগ্য ভাবার অভ্যেস অনেক সময় চোখে চোখ রেখে কথা বলার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কেউ যেন তার দুর্বলতা ধরে না ফেলে—এই ভয় থেকে জন্ম নেয় এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা।
আত্মিক বা মানসিক ট্রমা
যারা শৈশবে নির্যাতন, অবহেলা বা অন্য যেকোনো বড় মানসিক ট্রমার ভেতর দিয়ে গেছে, তাদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি তৈরি হয়। চোখে চোখ রাখা তাদের কাছে বিপদের সংকেত হয়ে দাঁড়ায়।
চোখে চোখ রেখে কথা না বলার পেছনে অনেক গভীর কারণ থাকতে পারে। কাউকে এ নিয়ে বিচার না করে বরং তার অতীত অভিজ্ঞতা বুঝতে চেষ্টা করা উচিত। সহানুভূতি ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে এমন মানুষদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ইতিবাচক করা সম্ভব।
সূত্রঃ ডেইলি মোটিভেশন নিউজ
আরশি