ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সহকারী জজ পদে  শাম্মী আক্তার

বিল্লাহ রিয়াদ

প্রকাশিত: ০২:২৬, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

সহকারী জজ পদে  শাম্মী আক্তার

  শাম্মী আক্তার

শাম্মী আক্তার  ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। দুবার ভাইভার মুখোমুখি হয়ে দ্বিতীয়বার সফলতার দেখা পেয়েছেন। এবার বিজেএসসি পরীক্ষায় সারাদেশে মোট ১০৩ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। যার মধ্যে শাম্মীর অবস্থান ৬৩তম। তার স্বপ্ন ও সফলতার গল্প শোনাচ্ছেন মুতাছিম বিল্লাহ রিয়াদ

শাম্মী আক্তারের জন্ম রাজশাহী জেলার তানোরের গংগারামপুরে। বাবা মৃত কোরবান আলী ও মা রেনুফা বেগমের ৯ সন্তানের মধ্যে অষ্টম তিনি। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তীব্র আগ্রহ ছিলো শাম্মী আক্তারের। তিনি জানান, ছোটকাল থেকে পড়াশোনার প্রতি আমার আকাক্সক্ষা ছিল প্রবল। স্কুল-কলেজ ভার্সিটিতে এসেও সবসময়ই ভালো কিছু করার চেষ্টা করতাম। বিচারক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে আমি নিয়মিত ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা পড়ালেখা করার চেষ্টা করেছি। প্রত্যেক দিনই পড়তাম। অযথা সময় নষ্ট করার প্রবণতা আমার কম ছিল।
স্বপ্ন পূরণে সর্বদাই পরিবারকে পাশে পেয়েছেন শাম্মী আক্তার। তিনি জানান, বিচারক হওয়ার পেছনে যে বাধাগুলো ছিল পরিবারের সমর্থন পাওয়ায় আমার জন্য সবকিছু সহজতর হয়েছে। আমার বাবা সবসময়ই চাইতেন, আমি যেন ভালো কিছু করি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হওয়ার মাধ্যমে বাবার চাওয়াটাও বড় হলো। বাবা চাইতেন আমি যেন বিচারক হই। তাই বাবার স্বপ্ন পূরণে আমি বিচারক হওয়ার লক্ষ্য স্থির করি। এটাই আমাকে বিচারক হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। কঠোর পরিশ্রমের ফলে আজ বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি, কিন্তু বাবা পাশে নেই। এটাই দুঃখজনক, যা আমার জন্য মেনে নেওয়া খুবই কষ্টকর। প্রথমবার ভাইভাতে ব্যর্থ হয়েও বিচারক হওয়ার স্বপ্ন পূরণের হাল ছাড়েননি শাম্মী আক্তার। শক্ত মনোবল নিয়ে ছুটেছেন স্বপ্ন পূরণের নেশায়। তিনি জানান, আমি প্রথমবার পরীক্ষায় ভাইভা পর্যন্ত গিয়েছিলাম। দ্বিতীয় বারে সফল হয়েছি। প্রথমবার ভাইবা থেকে বাদ পড়ে একেবারেই ভেঙে পড়েছিলাম। পরবর্তীতে আমার বড় ভাই আমাকে বুঝিয়ে মনোবল শক্ত করেন। পাশাপাশি বিশ^বিদ্যালয়ের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও সহপাঠীরা আমাকে সাহস দিয়েছেন। বলা চলে তাদের পরামর্শেই আমার মনোবল শক্ত হয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি শুকরিয়া জানাই। রবের অপার মহিমার কারণেই আজকে আমার বিচারক হওয়ার স্বপ্নটা পূরণ হয়েছে। যারা বিভিন্নভাবে আমাকে পরামর্শ দিয়ে পাশে ছিলেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। যেসব শিক্ষার্থী বিচারক হতে ইচ্ছুক তাদের নিয়মিত পড়াশোনার পরামর্শ দিয়েছেন শাম্মী আক্তার। তিনি জানান, যারা বিচারক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে তাদের জন্য আমার উপদেশ থাকবে প্রথমেই নিজেকে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে স্থির রাখতে হবে। প্রত্যেকদিন অন্ততপক্ষে ৭ ঘণ্টা আইন বিষয়ে পড়ালেখা করার চেষ্টা করতে হবে। 

×