
ছবি: সংগৃহীত
গাজা উপত্যকায় একদিকে চলছে ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, অন্যদিকে পরিকল্পিতভাবে হাসপাতাল ও বেসামরিক অবকাঠামো উড়িয়ে দিচ্ছে দখলদার বাহিনী। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা আগ্রাসনে ইতোমধ্যে গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইসরাইলি সেনারা। এখন এসব দখলকৃত অঞ্চল ইসরাইলি ভূখণ্ডে যুক্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তেলআভিভ।
ইসরাইলের প্রভাবশালী গণমাধ্যম হারেজ এক বিস্ফোরক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতেনিয়াহু গাজার বাফার জোনগুলো প্রথম ধাপে নিজেদের মানচিত্রে যুক্ত করতে চান। হামাস যদি যুদ্ধবিরোতিতে রাজি না হয়, তাহলে দ্রুত পুরো গাজা উপত্যকা দখলে নেওয়ার ঘোষণাও রয়েছে তার পরিকল্পনায়। এসব নিয়ে তিনি মন্ত্রিসভায় একটি প্রস্তাব উত্থাপন করতে যাচ্ছেন, যার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
তবে গাজাকে দখল ও ইসরাইলের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা ঘিরে নেতেনিয়াহুর সরকারের অভ্যন্তরেই দেখা দিয়েছে ফাটল। দুর্ভিক্ষ কবলিত গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ার প্রশ্নে মতবিরোধে জড়িয়েছে কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেচলালস স্মথস্ট্রিক। তিনি প্রশাসন থেকে পদত্যাগের হুমকি দিয়ে বসেন, যা নেতেনিয়াহুর সরকার পতনের সম্ভাবনা তৈরি করে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে গাজাকে ইসরাইলের অংশ হিসেবে যুক্ত করার প্রস্তাব সামনে এনে সরকার টিকিয়ে রাখার কৌশলে ফিরেছেন নেতানিয়াহু।
এই প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী স্মথস্ট্রিক পরে বলেন, “হামাসকে নির্মূল করাই ইসরাইলের প্রধান লক্ষ্য। রাজনৈতিক কারণে যদি সেই লক্ষ্য থেকে সরে আসা হয়, তবে তা হবে ভয়াবহ নিরাপত্তা হুমকি।” তিনি সতর্ক করে আরও বলেন, “গাজা দখলের এই প্রয়াসে আন্তর্জাতিক মহল কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে।”
ইসরাইলি নেতৃত্বের এসব ঘোষণা ও কৌশল গাজা সংকটকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে। এখন শুধু প্রশ্ন—ইসরাইল কি সত্যিই গাজাকে চূড়ান্তভাবে নিজেদের মানচিত্রে যুক্ত করবে, নাকি এটি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে আরও একটি ব্যর্থ আগ্রাসী প্রচেষ্টা হয়ে থাকবে?
শেখ ফরিদ