ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

জাপানে যুদ্ধের প্রস্তুতি? কুমামোতোয় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ৩০ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৬:৩৭, ৩০ জুলাই ২০২৫

জাপানে যুদ্ধের প্রস্তুতি? কুমামোতোয় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত

ছবি: সংগৃহীত

চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক তৎপরতা রুখতে দীর্ঘপাল্লার অ্যান্টি-শিপ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে যাচ্ছে জাপান। কুমামোতো প্রদেশের একটি সামরিক ঘাঁটিতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি টাইপ-১২ মিসাইল মোতায়েনের চূড়ান্ত পরিকল্পনা নিচ্ছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

চীনের উপকূল পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম টাইপ-১২

এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো গ্রাউন্ড সেল্ফ-ডিফেন্স ফোর্সের (GSDF) কুমামোতোর কেংগুন ক্যাম্পে চলতি অর্থবছরেই বসানো হবে। টাইপ-১২ এর উন্নত সংস্করণটির পাল্লা ১,০০০ কিলোমিটার, যা পূর্ববর্তী সংস্করণের চেয়ে অনেক বেশি। এর মাধ্যমে সরাসরি চীনের উপকূল পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব হবে।

এই উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ব্যবহার করা হবে ‘স্ট্যান্ডঅফ ক্যাপাবিলিটি’ হিসেবে—অর্থাৎ, শত্রুর হামলার সীমার বাইরে থেকেই প্রতিরক্ষা ও পাল্টা আক্রমণের ব্যবস্থা।

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ জাপানের নানসেই দ্বীপপুঞ্জ ঘিরে চীনা সামরিক মহড়া সম্প্রতি বেড়েছে। এ প্রেক্ষিতেই কৌশলগত অবস্থান থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

২০২৩ অর্থবছর থেকে জাপানে ব্যাপকহারে এই উন্নত টাইপ-১২ ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন শুরু হয়। গত বছর টোকিওর দক্ষিণের নিইজিমা দ্বীপে সফলভাবে এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সম্পন্ন হয়।

জাপানের সরকারি সূত্রমতে, ভবিষ্যতে কিউশুর ইউফুইন সামরিক ঘাঁটিতে এবং ওকিনাওয়ার কাটসুরেন সহকারী ঘাঁটিতে এই ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনাও বিবেচনায় রয়েছে। তবে ঠিক কবে এটি বাস্তবায়ন হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। সম্ভবত পরবর্তী অর্থবছর থেকেই তা শুরু হতে পারে।

এই পদক্ষেপ নিয়ে জাপানে কিছু উদ্বেগও দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, দীর্ঘপাল্লার স্ট্যান্ডঅফ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের কারণে জাপানের সামরিক ঘাঁটিগুলো সংঘাতকালে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে। আবার কারও কারও মতে, এই পদক্ষেপ জাপানের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, যেখানে স্পষ্ট বলা আছে যে জাপানের আত্মরক্ষাবাহিনী কেবলমাত্র প্রতিরক্ষামূলক ভূমিকা পালন করতে পারবে।

তবে ২০২২ সালে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তিনটি সংশোধিত নীতিমালায় জাপান সরকার স্ট্যান্ডঅফ মিসাইল সক্ষমতাকে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা কৌশল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তাই ভবিষ্যতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়তেই পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

রাকিব

×