ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

জাতীয় প্রেসক্লাব স্বৈরাচারের ভূমিকায় গেলে আবারও পথ হারাবে দেশ

প্রকাশিত: ২১:১৬, ৩০ জুলাই ২০২৫

জাতীয় প্রেসক্লাব স্বৈরাচারের ভূমিকায় গেলে আবারও পথ হারাবে দেশ

ছবি: জনকণ্ঠ

আওয়ামী লীগের সময় দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যম এবং কয়েকটি সাংবাদিক সংগঠন ছিল দুঃশাসনের পাহারাদারের ভূমিকায়। যখন শেখ হাসিনার নির্দেশে সারাদেশে গণহত্যা চলছিল সে সময় প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতারা উস্কে দিয়েছিল শেখ হাসিনাকে। চব্বিশের পাঁচ আগস্ট গণমাধ্যামকর্মীসহ দুই হাজারেরও অধিক ছাত্র-জনতার প্রাণের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। 

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময় মানুষ অংশীজনেরা একটি স্বপ্ন বুকে ধারণ করে বেঁচে আছেন। তা হচ্ছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ফ্যাসিবাদমুক্ত হবে এবং আর কখনও এসব প্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিবাদ তৈরি হবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিষ্ঠান দৃশ্যমান কোনো সংস্কার হয়নি। ফ্যাসিবাদ যারা কায়েম করেছিল তারাই বসে আছে।

জাতীয় প্রেসক্লাব বাক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রতীক। চব্বিশের পাঁচ আগস্ট প্রেসক্লাবের কয়েকজন নেতা পালিয়ে যাওয়ার পর তার দখল নেয় বসুন্ধরা গ্রুপের পত্রিকা কালের কণ্ঠের বর্তমান সম্পাদক হাসান হাফিজসহ কয়েকজন। সে সময় সাংবাদিক সমাজ ধারণা করেছিল এবার হয়ত প্রেসক্লাব ফ্যাসিবাদ মুক্ত হবে। অথচ দেখা যাচ্ছে এখনো প্রেসক্লাবে বসে সময় কাটাচ্ছেন অনেক হত্যা মামলার আসামি আওয়ামীপন্থি সাংবাদিকরা। 

একই সঙ্গে নতুন স্বৈরাচার জন্ম দেওয়ার পরিকল্পনা করছে জাতীয় প্রেসক্লাব। দুঃখজনক হলেও সত্য যে জাতীয় প্রেসক্লাব গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সবসময় কার্যকরী ভূমিকায় ছিল সে প্রেসক্লাব এবার নতুন করে স্বৈরাচারী আচরণ শুরু করেছে। বুধবার বিকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দৃষ্টিগোচর হয় জুলাই ঐক্যের। যেখানে দেখা যায় আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভা, আলোকচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনী এবং শহিদ সাংবাদিকদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে শুরু করে বিশেষ অতিথি রাখা হয়েছে একটি মাত্র দল থেকে। এই অনুষ্ঠানে দাওয়াত করা হয়নি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের। 

৫ আগস্টের পর আমরা দেখেছি একটি রাজনৈতিক দলের নেতার নেতৃত্বে প্রেসক্লাবের হল রুমে মুজিববাদের স্লোগান দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষে বিবৃতি দেয় প্রেসক্লাব।

জুলাই ঐক্য মনে করে প্রেসক্লাবের মতো জাতীয় একটি জায়গায় যদি আবারও একদলীয় নিয়ন্ত্রণ শুরু হয় তাহলে গণমাধ্যম আবারও নতুন আরেকটির ফ্যাসিবাদের জন্ম দিবে৷ আবারও পথ হারাবে বাংলাদেশ।  

আমরা দাবি করছি অবিলম্বে জাতীয় প্রেসক্লাবে ব্যানারে একদলীয় রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করুন অথবা গণঅভ্যুত্থানের সকল অংশীজনদের উপস্থিতি নিশ্চিত করুন। 

আবির

আরো পড়ুন  

×