
ছবি: সংগৃহীত
মৃত্যুর আট মিনিট পর আবারও জীবিত হলেন এক নারী। শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনাটি সত্যি। আর এই আট মিনিটের অভিজ্ঞতা শুধু তার জীবনের দৃষ্টিভঙ্গিই পাল্টে দেয়নি, বরং জন্ম দিয়েছে মৃত্যুর পরবর্তী জীবন নিয়ে নতুন প্রশ্ন ও আলোচনার। বিস্তারিত সৈয়েদ নওশাদের ডেস্ক রিপোর্টে।
মৃত্যুর পরের জীবন কেমন হয়—এ প্রশ্ন ঘিরে যুগ যুগ ধরে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। বিজ্ঞানীরাও মৃত্যুর সময় মানুষের অনুভূতি নিয়ে বহু গবেষণা করেছেন। এবার মৃত্যু-পরবর্তী এক সরাসরি অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন এক মার্কিন নারী, যিনি দাবি করেন, আট মিনিট ধরে তিনি ছিলেন মৃত। এবং সেই সময়কার অভিজ্ঞতা তার মনে গেঁথে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য মিরর-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩৩ বছর বয়সী ব্রিয়ানা লাফার্টি নামের ওই নারী এক বিরল এবং প্রাণঘাতী স্নায়বিক রোগ মায়োক্লোনাস ডিস্টোনিয়া-তে আক্রান্ত ছিলেন। এই জটিল নিউরোলজিক্যাল রোগের কারণে একসময় তার শরীর সম্পূর্ণভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয় এবং চিকিৎসকরা তাকে ক্লিনিক্যালি মৃত ঘোষণা করেন। ঠিক সেই সময়েই আট মিনিটের জন্য তিনি ছিলেন 'মৃত'। এরপর বিস্ময়করভাবে জীবনে ফিরে আসেন ব্রিয়ানা।
এই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, “মৃত্যু আসলে এক বিভ্রম। সেই সময় কোনো ব্যথা ছিল না, বরং ছিল এক ধরনের গভীর শান্তি আর অভাবনীয় স্পষ্টতা।” তিনি আরও জানান, “আমি হঠাৎ দেখি, আমার শরীর থেকে আলাদা হয়ে গেছি। নিজেকে আর মানবদেহে চিনতেই পারিনি। কিন্তু আমি ছিলাম—জীবিত, সচেতন, এবং এক ধরনের প্রাণবন্ত অনুভব করছিলাম। যেন তখনই আমি প্রকৃত অর্থে ‘আমি’ ছিলাম।”
ব্রিয়ানা বলেন, “সেই জগতে এমন কিছু প্রাণীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল, যাদের মানুষ বলা যায় না, কিন্তু তবুও খুব পরিচিত মনে হচ্ছিল। সময় যেন সেখানে অস্তিত্বহীন। সবকিছু একসাথে ঘটছিল, ঘুরছিল, অথচ ছিল নিখুঁত শৃঙ্খলার মধ্যে।”
এই অদ্ভুত ও গভীর অভিজ্ঞতা ব্রিয়ানার জীবনদর্শন বদলে দেয়। মৃত্যু তাকে শিখিয়ে দেয় জীবনের প্রকৃত অর্থ কী, আর বেঁচে থাকাকে কীভাবে দেখা উচিত। এখন তিনি জীবনকে দেখেন নতুন আলোয়—শান্তি, স্বচ্ছতা ও রহস্যের এক অপার উপলব্ধির মধ্য দিয়ে।
এই অভিজ্ঞতা চিকিৎসা বিজ্ঞানকে যেমন নতুন প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে, তেমনি মানব সভ্যতাকেও মনে করিয়ে দিচ্ছে—জীবন ও মৃত্যুর মাঝখানে হয়তো কোনো অজানা দরজা সত্যিই আছে, যা আমাদের চেনা বাস্তবতাকে ছাপিয়ে অন্য এক স্তরে নিয়ে যায়।
শেখ ফরিদ