
অনেকেই আছেন যাঁরা সকালে ঘুম থেকে উঠেই একটি অম্বলের ওষুধ সটান পেটে চালান করেন। জমিয়ে ভূরিভোজের পর অনেকেই একটা করে অ্যান্টাসিড মুখে পুরে দেন। অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ সাময়িকভাবে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থেকে রেহাই দেয় বটে, কিন্তু এগুলি ঘন ঘন খাওয়া কি ঠিক?
চিকিৎসকেরা বলেন, খেয়ে উঠেই অম্বলের ওষুধ খেয়ে ফেলা স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ভাল নয়। এতে সাময়িকভাবে গলা-বুক জ্বালা কমলেও হজমের সমস্যা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি হয়ে যাবে। তখন ওষুধ না খেলে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আর খাবার হজমই হবে না।
গ্যাস-অম্বলের সমস্যায় আমরা খুঁজি চটজলদি সমাধান। খুঁজতে গিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমরা এই জাতীয় ওষুধের অপব্যবহার শুরু করি, আর তাতেই হয় বিপত্তি। হঠাৎ অম্বলে সবচেয়ে ভাল ওষুধ লিকুইড অ্যান্টাসিড। কিন্তু মানুষজন খাওয়ার ওষুধই খেয়ে নেন। কী ডোজ়ে ও কত দিন খেতে হবে তা না জেনেই এবং চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই এমন ওষুধ খাওয়া শুরু করে দেন। আর এর প্রভাব হতে পারে মারাত্মক। জেনে নিন, ঘন ঘন অ্যান্টাসিড খেলে শরীরের কী কী ক্ষতি হতে পারে।
১) দীর্ঘ দিন ধরে গ্যাসের ওষুধ খেতে থাকলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে কিডনির উপর। কিডনির অসুখ সহজে ধরা পড়ে না, তাই এক টানা দীর্ঘ দিন গ্যাসের ওষুধ কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।
২) বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে অ্যান্টাসিড অধিক মাত্রায় খেলে হার্টের রোগেরও ঝুঁকি বাড়ে। তাই হার্টের রোগীদের চিকিৎসকদের পরামর্শ না নিয়ে অ্যান্টাসিড খাওয়া উচিত নয়।
৩) দীর্ঘ দিন অ্যান্টাসিড খেলে হাড়েরও ক্ষতি হয়। অ্যান্টাসিড শরীরে ক্যালশিয়াম শোষণে বাধা দেয়। তাই অস্টিয়োপোরেসিস বা বাতের অসুখের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে এই অভ্যাস।
৪) খাওয়ার পর রোজ রোজ যদি অম্বলের ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস করা হয়, তা হলে তার অনেক প্রভাব পড়বে শরীরে। পাকস্থলীর উপকারী ব্যাক্টেরিয়াগুলি নষ্ট হবে। আর উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার ক্ষতি মানেই দেখা দিতে পারে স্থূলতা এবং ডায়াবিটিস। ফলিক অ্যাসিড, ক্যালশিয়াম, আয়রন হজমে সমস্যা হবে। ফলে অচিরেই অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা দেখা দেবে। তখন পাকস্থলী থেকে অ্যাসিড খাদ্যনালি দিয়ে উপরে উঠে আসতে থাকবে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হজম না হলেই এমন হবে। তখন ওষুধ না খেলে আরাম হবে না।
সজিব