
ছবিঃ সংগৃহীত
চোখ—মানবদেহের অন্যতম সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। অথচ আমরা চোখের যত্নে অনেক সময়ই উদাসীন থাকি। আর এই অবহেলাই ডেকে আনতে পারে মারাত্মক রোগ—চোখের ক্যান্সার। অনেকের ধারণা এটি শুধু বয়স বাড়ার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, কিন্তু বাস্তবতা হলো, যেকোনো বয়সেই চোখের ক্যান্সার হতে পারে—even শিশুদের মধ্যেও এই রোগের দেখা মিলছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চোখের ভেতরের টিস্যু বা কোষে যখন অস্বাভাবিকভাবে কোষ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং তা আশপাশের কোষে ছড়িয়ে পড়ে, তখন তা ক্যান্সারে রূপ নেয়। চোখের ক্যান্সার মূলত দুটি প্রকারের হতে পারে—প্রাইমারি (চোখ থেকেই উৎপন্ন) এবং সেকেন্ডারি (অন্য অঙ্গ থেকে ছড়িয়ে পড়া)।
চোখের ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণগুলো কী?
চোখের ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্দিষ্ট লক্ষণ ছাড়াও ধীরে ধীরে কিছু উপসর্গ প্রকাশ করে। নিচে এমন কিছু সাধারণ লক্ষণ তুলে ধরা হলো—
১. চোখে ঝাপসা দেখা
দৃষ্টিশক্তি হঠাৎ কমে যাওয়া বা ঝাপসা দেখা চোখের ভিতরে টিউমার হওয়ার ইঙ্গিত হতে পারে।
২. চোখে সাদা বা হলুদ রঙের প্রতিফলন
বিশেষ করে শিশুর চোখে ছবি তুললে মাঝে মাঝে চোখে সাদা আলো প্রতিফলিত হলে তা হতে পারে রেটিনোব্লাস্টোমার (শিশুদের চোখের ক্যান্সার) লক্ষণ।
৩. চোখে ব্যথা বা অস্বস্তি
চোখে বা আশপাশে ক্রমাগত ব্যথা বা চাপ অনুভব হলে তা অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
৪. চোখের মুভমেন্টে পরিবর্তন
চোখ ঘোরানো বা তাকানোর সময় অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে তা চোখের পেছনে কোনো সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
৫. চোখের রঙে পরিবর্তন
চোখের রঙ বা কর্নিয়ায় হঠাৎ দাগ বা পরিবর্তন দেখা দিলে তা হতে পারে চোখের ভেতরে কোষ বৃদ্ধির ইঙ্গিত।
৬. দৃষ্টিক্ষীণতা বা হঠাৎ অন্ধত্ব
হঠাৎ করে এক চোখ বা উভয় চোখে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যাওয়া চোখের ক্যান্সারের অন্যতম গুরুতর লক্ষণ হতে পারে।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
উপরের যে কোনো উপসর্গ এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে দেরি না করে চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা নিলে চোখের ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ—উভয়ই সম্ভব।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন?
- নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করা
- অতিরিক্ত সূর্যের আলো থেকে চোখ রক্ষা করা
- চোখে কোনো সমস্যা হলে বাড়তি সময় না নিয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
- শিশুর চোখের দিকে নিয়মিত খেয়াল রাখা
- পারিবারিক ইতিহাস থাকলে সচেতনতা বাড়ানো
শেষ কথা:
চোখের ক্যান্সার ভয়ানক হলেও সচেতনতা ও সময়মতো চিকিৎসার মাধ্যমে এটি থেকে বাঁচা সম্ভব। তাই দেরি না করে চোখের প্রতি যত্নবান হোন, নিয়মিত পরীক্ষা করুন এবং পরিবারের অন্যদেরও সচেতন করুন।
আলীম