
অনেকেই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরও অনুভব করেন, যেন শরীর–মন একটুও বিশ্রাম পায়নি। কাজের এনার্জি নেই, মাথা ঝিমঝিম করে, চোখ ভারী লাগে। অথচ রাতে ঘুম থেকেও উঠেছেন সময়মতো। এমন সমস্যার পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে একাধিক স্বাস্থ্যগত কারণ। চলুন জেনে নিই, কোন কোন রোগ বা অবস্থার কারণে এমন হতে পারে।
১. স্লিপ অ্যাপনিয়া (Sleep Apnea)
এই রোগে রাতে ঘুমানোর সময় বারবার শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, যা আপনি টেরও পান না। এতে শরীর গভীর ঘুমে যেতে পারে না এবং সকালে ঘুম ভাঙলেও ক্লান্তি কাটে না।
লক্ষণ:
🔹 নাক ডাকা
🔹 হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়া
🔹 দিনে অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব
২. আয়রন স্বল্পতা (Iron Deficiency/রক্তাল্পতা)
আয়রনের ঘাটতিতে শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না, ফলে ঘুম থেকে ওঠার পরও ক্লান্তি অনুভব হয়।
লক্ষণ:
🔹 মাথা ঘোরা
🔹 চুল পড়া
🔹 নিঃশ্বাসে কষ্ট
৩. হাইপোথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism)
থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি শরীরের বিপাকক্রিয়া ধীর করে দেয়। এতে সারাদিনই ঝিমুনিভাব থাকে।
লক্ষণ:
🔹 ওজন বেড়ে যাওয়া
🔹 ঠান্ডা সহ্য না হওয়া
🔹 অবসাদ
৪. ডিপ্রেশন বা উদ্বেগজনিত ঘুম সমস্যা
মানসিক চাপে ঘুম হয়তো হয়, কিন্তু তা হয় না গভীর। ফলে পরদিনও ক্লান্তি যায় না।
লক্ষণ:
🔹 মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া
🔹 মুড সুইং
🔹 আগ্রহহীনতা
৫. ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিসে রক্তে গ্লুকোজের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। এতে ঘুমের গুণমান ও শক্তি উৎপাদনে সমস্যা হয়।
লক্ষণ:
🔹 ঘন ঘন প্রস্রাব
🔹 অতিরিক্ত পিপাসা
🔹 ঝিমুনিভাব
✅ কী করবেন?
✔️ রাতে ৭-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম নিশ্চিত করুন
✔️ ঘুমের আগে মোবাইল বা স্ক্রিন টাইম কমান
✔️ প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস গড়ুন
✔️ প্রয়োজনে থাইরয়েড, আয়রন বা ব্লাড সুগার পরীক্ষা করান
✔️ অবসাদ বা উদ্বেগ থাকলে কাউন্সেলিং নিন
✔️ নাক ডাকার সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
প্রতিদিন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ক্লান্ত থাকা মোটেই স্বাভাবিক নয়। এটি হতে পারে শরীরে লুকিয়ে থাকা কোনো বড় সমস্যার ইঙ্গিত। তাই দীর্ঘদিন এমন সমস্যায় ভুগলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
Mily