ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

পাকিস্তানকে কাছে টেনে ট্রাম্প কী বার্তা দিচ্ছেন ভারতকে?

প্রকাশিত: ১৪:০৫, ২ আগস্ট ২০২৫

পাকিস্তানকে কাছে টেনে ট্রাম্প কী বার্তা দিচ্ছেন ভারতকে?

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ওপর পাল্টা শুল্ক এবং রাশিয়া থেকে আমদানি করা তেল ও অস্ত্রের কারণে জরিমানার ঘোষণা দিয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিশাল চমক দেন—পাকিস্তানের সঙ্গে বড় একটি জ্বালানি চুক্তির কথা জানান তিনি। ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ভারতকে খোঁচা দিয়ে ট্রাম্প লিখেন, "একদিন হয়তো পাকিস্তানই ভারতে তেল রপ্তানি করবে!"

২০১৮ সালে পাকিস্তানকে "ধোঁকাবাজ" বললেও দ্বিতীয় মেয়াদে এসে ট্রাম্প যেন পুরোপুরি অবস্থান বদলেছেন। এখন ইসলামাবাদ-ওয়াশিংটন সম্পর্ক দিনে দিনে গভীরতর হচ্ছে। তিনি জানান, পাকিস্তানের খনিজ তেল সম্পদ যৌথভাবে উন্নয়নের জন্য দুই দেশ সমঝোতায় পৌঁছেছে, আর এই উদ্যোগে নেতৃত্ব দিতে মার্কিন কোম্পানি বাছাই প্রক্রিয়াও চলছে।

এই ঘনিষ্ঠতা শুধু জ্বালানি খাতে নয়—সাম্প্রতিক সময়ে সামরিক সহযোগিতাও দৃশ্যমানভাবে বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল কুরিলাকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান "নিশান-ই-ইমতিয়াজ" দেওয়া হয়। একইসাথে পাকিস্তানের সেনা ও বিমানবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা পরপর ওয়াশিংটন সফর করেছেন, মার্কিন সামরিক হার্ডওয়্যার কেনা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোই যার মূল লক্ষ্য বলে মনে করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজও এই ঘনিষ্ঠতারই আরেকটি নিদর্শন। এমনকি পাকিস্তান ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য সুপারিশ করেছে বলেও জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। একইসঙ্গে পাকিস্তান ট্রাম্প পরিবারের মালিকানাধীন ‘ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফিনান্সিয়াল’-এর সঙ্গে ক্রিপ্টো ফিনান্সে অংশীদার হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে—ভারতের জন্য এর তাৎপর্য কী? 'কোয়াড' জোটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে ভারত এতদিন আমেরিকার ঘনিষ্ঠ স্ট্র্যাটেজিক অংশীদার ছিল। কিন্তু ট্রাম্প এখন পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকছেন, চীনের সঙ্গে সরাসরি সমঝোতার কথা বলছেন—ভারতকে মাঝের খেলোয়াড় হিসেবে দেখছেন না।

সাবেক কূটনীতিকদের মতে, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে শক্তির ভারসাম্য নতুন করে গঠিত হচ্ছে। ভারতের জন্য এটি শুধু কূটনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকেও বড় এক চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।

আসিফ

×