
ছবি: সংগৃহীত।
বর্ষা মৌসুমে ঠান্ডা লাগা, সর্দি-কাশি বা জ্বরের সমস্যা নতুন নয়। কিন্তু এই সমস্যাগুলি দীর্ঘস্থায়ী হলে বা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকলে তা সাধারণ ভাইরাল ইনফেকশন নয়, নিউমোনিয়ার লক্ষণও হতে পারে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিউমোনিয়া হল এক ধরনের ফুসফুসে সংক্রমণজনিত রোগ, যেখানে ফুসফুসে প্রদাহ তৈরি হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে জলও জমে যেতে পারে। মূলত ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাকজনিত সংক্রমণের কারণে এই রোগ হয়। এর অন্যতম প্রধান কারণ স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি ব্যাক্টেরিয়া।
চিকিৎসকদের মতে, সাধারণ ঠান্ডা বা জ্বর সাধারণত ওষুধে কিছু দিনের মধ্যেই সেরে যায়। কিন্তু নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে লক্ষণগুলি তীব্র হয় এবং সারে না। শ্বাসকষ্ট, গভীর শ্বাসে বুকের ব্যথা, দুর্বলতা, খাওয়ার অনীহা বা বমি বমি ভাব থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।”
নিউমোনিয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে-
একাধিক দিন ধরে জ্বর ও কাশি
শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া
গভীর শ্বাসে বুকের ব্যথা
মাথাব্যথা ও দুর্বলতা
খাওয়ায় অনীহা এবং বমি ভাব
শিশুদের ক্ষেত্রেও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি। বিশেষ করে চার বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। তাই বর্ষাকালে ঠান্ডা লাগার সঙ্গে সঙ্গে মা-বাবাকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
শিশুরা স্বাভাবিক খেলাধুলা করছে কি না, খাওয়া-দাওয়ায় আগ্রহ আছে কি না, অতিরিক্ত কাঁদছে কি না, বা নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে কি না-এসব লক্ষণ খেয়াল রাখতে হবে। শ্বাসকষ্ট বা দুর্বলতা দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধে টিকাকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে দুটি প্রকারের নিউমোনিয়ার টিকা প্রচলিত রয়েছে-একটি বছরে একবার নেওয়া যায়, অন্যটি পাঁচ বছর অন্তর বুস্টার ডোজ হিসেবে। তবে কার কোন টিকা প্রয়োজন, তা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ঠিক করা উচিত।
দূষণ ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এখন আর নিউমোনিয়া শুধুমাত্র শীতকালেই সীমাবদ্ধ নয়। বর্ষাতেও যদি দীর্ঘস্থায়ী জ্বর ও কাশি থেকে যায়, সঙ্গে থাকে শ্বাসকষ্ট, তা হলে তা অবহেলা না করে সময়মতো চিকিৎসা নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
মিরাজ খান