
এক সময়কার বঙ্গবন্ধু-নির্ভর পাঠ্যপুস্তক ও সাংস্কৃতিক কাঠামোয় বেড়ে ওঠা ছাত্ররা হঠাৎ করেই সংগ্রামী হয়ে উঠে । তাদের মধ্যে তৈরি হয় রাজনৈতিক সচেতনতা। ২০২৪ এর জুলাই শুধু সরকার বিরোধী আন্দোলন ছিল না এটি ছিল মিথ্যার জাল থেকে বেড়িয়ে আসা ছাত্র সমাজের সংগ্রাম।
শিক্ষার ছাঁচে গড়া ইতিহাস ভেঙে একজন সচেতন নাগরিক হয়ে ওঠার গল্প বললেন জুলাইয়ের আন্দোলনের পরিচিত মুখ ফারহানা হোসেন জিম ।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ফারহানা তুলে ধরেছেন তার ভাবনার বিবর্তন, যেভাবে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক আদর্শ ছোটবেলা থেকে তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং কিভাবে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও বিবেক তাকে সেই আদর্শ নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে।
ফারহানা জানান, কীভাবে ক্লাস ওয়ান থেকে শুরু করে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত তার পাঠ্যসূচি ও সহশিক্ষা কার্যক্রম ছিল ‘বঙ্গবন্ধু ইনক্লুডেড’। বইপত্র থেকে প্রতিযোগিতা—সবখানে ছিল একমুখী বার্তা: বঙ্গবন্ধুই ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দু। এমনকি তিনি জানান, তার ঘরে বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক অন্তত ১২-১৩টি বই রয়েছে।
যতই সময় গড়িয়েছে, ততই ফারহানার মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে— “একজন মানুষ এত কিছু একা করতে পারেন?” ছেলেবেলায় শেখানো অনেক তথ্য ও গৌরবময় গল্প একসময় তার কাছে অতিরঞ্জিত মনে হতে থাকে। বাস্তব জীবনে অন্য নেতাদের কথা বা অবদান চাপা পড়ে যায়, এবং বঙ্গবন্ধুকে একমাত্র নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু যতটুকু করেছেন, তার মেয়ে সেটা ১০০ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু তার পাশাপাশি আরো অনেকে ছিলেন, যাদের কথা আমরা জানিই না।"
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দেশের গরিব শ্রেণির সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। তারা গরিবই থেকে যাচ্ছে। আর কিছু লোক আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাচ্ছে।”
এই বৈষম্য, এই অবিচার, তাকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে তোলে।
ফারহানা বলেন, আমি যখন এটা সত্যিটা জানছি বা দেখতে পাচ্ছি যে আমার দেশের বর্তমান পরিস্থিতি কি, আমার দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা কি, আমাদের দেশের মানুষের আসলে বর্তমানে, আমরা তো হচ্ছে দরিদ্র দেশ, আমরা তো খুব উন্নত দেশ মোটেও তা এমন না।
ফারহানার মতে, তিনি জন্মের পর থেকেই আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন দেখছেন।
তিনি বিশ্বাস করেন,“দেশের যতটা উন্নয়ন তারা করতে পারতো, তার চেয়ে বেশি তারা টাকা মেরে খেয়েছে। নিজেদের পকেট ভারি করে, যতটুকু খুচরা পয়সা ছিলো সেটা দেশের পেছনে দিয়েছে।”
সানজানা