ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০১ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

২১ শতকের নাৎসিদের থামাতে হবে: ইসরায়েলি আগ্রাসন নিয়ে ক্বালিবাফের হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত: ১৮:০০, ৩১ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৮:০২, ৩১ জুলাই ২০২৫

২১ শতকের নাৎসিদের থামাতে হবে: ইসরায়েলি আগ্রাসন নিয়ে ক্বালিবাফের হুঁশিয়ারি

ছবিঃ সংগৃহীত

ইরানি সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের ক্বালিবাফ ইসরায়েলি বাহিনীর গাজায় বর্বরতা ও ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “২১ শতকের নাৎসিদের থামাতে হবে, না হলে দেরি হয়ে যাবে।”

জেনেভায় অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিশ্ব সংসদীয় স্পিকার সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে ক্বালিবাফ বলেন, বিশ্বের সব অঞ্চলের শীর্ষ আইনপ্রণেতারা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একত্রিত হয়েছেন। কারণ আজকের আগ্রাসন মানবজাতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, গাজায় যে বিপর্যয় চলছে, তা অতুলনীয় এবং শুধুমাত্র মানব ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়গুলোর সঙ্গেই তুলনা করা যায়।

“আমরা ২১ শতকের নাৎসিদের আবির্ভাব প্রত্যক্ষ করছি,” বলেন ক্বালিবাফ।
তিনি আরও বলেন, “একটি শীতলমস্তিষ্ক ও ভয়ঙ্কর মানসিকতা সম্পন্ন শাসনব্যবস্থা এমন এক আগ্রাসন শুরু করেছে, যা ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য অপরাধগুলোর দুঃস্বপ্ন থেকে জন্ম নিয়েছে।”

তিনি বলেন, মানবতা যাতে চিরতরে নিপীড়নের ঘূর্ণাবর্তে হারিয়ে না যায়, সেজন্য এখনই জায়নবাদীদের এই নাৎসি চরিত্রকে রুখে দিতে হবে।

গাজা যুদ্ধের মূল কারণ, পরিণতি ও প্রভাব নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়কে গুরুত্ব সহকারে চিন্তা ও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

“গাজা এখন শুধুই একটি ভূমি নয়, এটি একটি কসাইখানা এবং অপরাধের মঞ্চ। এটি একটি হত্যাযজ্ঞ, যার ভিত্তি নির্মিত হয়েছে এক ভয়ঙ্কর মানসিকতায় যা মানবতাকে গ্রাস করছে,” বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “এটি কোনো যুদ্ধ নয়, এটি একটি পরিকল্পিত গণহত্যা।”

ইসরায়েলের ইরানবিরোধী যুদ্ধ নিয়েও ক্বালিবাফ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “এই হামলা কেবল ইরানের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতার জন্য হুমকি নয়, বরং এটি পুরো অঞ্চলের ও বিশ্বের সম্মিলিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপরও হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদসহ আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষার কাঠামোগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

ক্বালিবাফ জানান, ইসরায়েলি হামলার জবাবে ইরানের প্রতিক্রিয়া ছিল আত্মরক্ষার অধিকার অনুসারে। তিনি বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিশ্রুতি বা পরাশক্তিদের ফাঁকা কথার ওপর নির্ভর করিনি।”

উল্লেখ্য, ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের সামরিক, পারমাণবিক ও আবাসিক স্থাপনায় টানা ১২ দিনের আগ্রাসন চালায়। এর মধ্যে ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের নাতান্জ, ফোরদো এবং ইসফাহানে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়।

এর পাল্টা জবাবে ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অ্যারোস্পেস ইউনিট “অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩” এর অংশ হিসেবে অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চলের বিভিন্ন শহরে ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের কাতারে অবস্থিত বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি আল-উদেইদ এয়ার বেসে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরানি বাহিনী।

২৪ জুন কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতিতে এই সংঘাত সাময়িকভাবে বন্ধ হয়।

ইমরান

×