ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

পুষ্টি ও পরিবেশ—দুইয়ের সমন্বয়: প্রোটিন সংকট মোকাবিলায় জাপানে জনপ্রিয়তা বাড়ছে ‘অনিগিরি’র

প্রকাশিত: ০৭:০১, ৩০ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৭:০২, ৩০ জুলাই ২০২৫

পুষ্টি ও পরিবেশ—দুইয়ের সমন্বয়: প্রোটিন সংকট মোকাবিলায় জাপানে জনপ্রিয়তা বাড়ছে ‘অনিগিরি’র

ছবি: সংগৃহীত

জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত খাদ্যশস্য, ল্যাবে উৎপাদিত মাংস বা পুষ্টিসমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট নয়—জাপানের ওসাকা-কানসাই এক্সপোতে ‘ভবিষ্যতের খাবার’ হিসেবে পরিবেশন করা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এক অনিগিরি (চাল ও সোয়াবিনের বল)। স্বাস্থ্যকর এবং শতাব্দীপ্রাচীন এই খাবার এবার আধুনিক পুষ্টি সংকট মোকাবিলার প্রতীক হয়ে উঠছে।

আগামী ৪ আগস্ট এক্সপোতে ‘ভবিষ্যতের খাবার ও সংস্কৃতি’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে অংশ নিতে যাচ্ছে কোবে-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান Maruyanagi Foods Inc.। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ‘শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জাপানি খাদ্য তালিকায় থাকা বিন ও গ্রেইন-জাতীয় উপাদানগুলোর মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের টেকসই সমাধান।’

পুষ্টি ও পরিবেশ—দুইয়ের সমন্বয়

এই বিশেষ অনিগিরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে সেদ্ধ সোয়াবিন, সাদা চাল ও আঁশ-সমৃদ্ধ যব (barley)। প্রাকৃতিক লবণ, সয়া সস ও ঐতিহ্যবাহী দাশি ব্রথে এই চালের বলকে সুস্বাদু করা হয়। প্রতিটি ১২০ গ্রাম ওজনের অনিগিরিতে রয়েছে ৫.৬ গ্রাম খাদ্য আঁশ, যা একটি সাধারণ রাইস বলের তুলনায় তিন গুণ বেশি।

বিশ্বব্যাপী প্রোটিন সংকট মোকাবিলায়ও এই খাবারটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি। ১০০ গ্রাম সেদ্ধ সোয়াবিনে প্রায় ১৬.৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা গরুর মাংসের প্রায় সমপরিমাণ। একইসঙ্গে সোয়াবিন চাষে পানির ব্যবহার খুবই কম—গরুর মাংস সমপরিমাণ প্রোটিন উৎপাদনের জন্য যতটা পানি লাগে, তার মাত্র ১৩ শতাংশ প্রয়োজন হয় সোয়াবিন চাষে। পাশাপাশি এটি গবাদি পশুর তুলনায় ৯৮.৮ শতাংশ কম গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত করে।

‘ফুড অব দ্য ফিউচার’ তালিকায় স্থান পেয়েছে সোয়াবিন

বিশ্বব্যাপী পরিবেশ আন্দোলনের অন্যতম সংগঠন World Wide Fund for Nature (WWF) সোয়াবিনকে ‘ভবিষ্যতের ৫০টি খাবারের’ একটি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। শুধুই পুষ্টি নয়, খাদ্য উৎপাদনের পরিবেশগত দিক থেকেও সোয়াবিনকে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে।

ফসল চক্রেও ভূমিকা রাখবে যব

এ অনিগিরির প্রায় ৪০ শতাংশ তৈরি হয়েছে যব ও সেদ্ধ সোয়াবিন দিয়ে। যব শরতের শেষ থেকে গ্রীষ্মের শুরু পর্যন্ত চাষ করা যায়, ফলে ধানের পাশাপাশি এটি ফসল চক্রে স্থান পেলে মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা ও পানি সাশ্রয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। যব চাষে ধানের তুলনায় পানি ও শ্রম উভয়ই কম লাগে।

ওসাকার হেলথকেয়ার প্যাভিলিয়নের ‘Food and Culture of the Future’ বিভাগে আগামী ৪ আগস্ট সকাল ১০টা থেকে দর্শনার্থীদের মধ্যে ২,৮০০টি নতুন অনিগিরি বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। Maruyanagi Foods-এর মতে, এই অনিগিরি শুধু খাবার নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য টেকসই চিন্তার এক উদাহরণ।

রাকিব

×