
১ টাকা ২ টাকার ভাড়া বর্তমান ২০ টাকা ৩০ টাকা হয়েছে। মাঝে কেটে গেছে ৫২ বছর, পাবনা শহরের প্রবীণ রিকশাচালকদের মধ্যে আবুল বাসার (৭৩) অন্যতম। শহরের প্রতিটি বাড়ি যেন তার চিরচেনা। দীর্ঘ দিন রিকশা চালানোর ফলে শহরের প্রতিটি ইট-পাথরের সাথে তার সম্পর্ক।
জীবনের শেষ সময় চলে এসেছে। শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে গেলেও ব্যাটারি চালিত রিকশা চালিয়ে মৌলিক চাহিদা পূরণ করছেন তিনি। ছেলে-মেয়েদের মানুষের মতো মানুষ করেছেন।
পায়ে প্যাডেল দিয়ে রিকশা চালিয়েছেন প্রায় ৪৫ বছর। তখন কষ্ট বেশি হলেও মানুষের মনুষ্যত্ব, মানবিকতা ছিল। কিন্তু বর্তমান মানুষের বিবেক বলতে কিছু নাই, রিকশাচালকদের সাথে বাজে ব্যবহার করার মানুষই বেশি।
আবুল বাসার বলেন, পাকিস্তান আমল থেকে রিকশা চালাই। এত বড় বড় দালান আমার চোখের সামনে হলো। রিকশা চালিয়ে আব্বা ও মায়ের চিকিৎসা করেছি। আমি আমার মায়ের দোয়া নিয়ে বেঁচে আছি। অর্ধশত বছর রিকশায় কেটে গেছে, এখন আমার বয়স ৭৩ বছর। মৃত্যু আমার নিকটে, ঈমানের সাথে মরে যেতে চাই।
শহরের সাধুপাড়া অঞ্চলের ফারুক বলেন, ছোটবেলা থেকে দেখি বাসার দাদু রিকশা চালায়। থাকার মতো নিজের বাড়িও নাই, থাকেন সরকারি জায়গায়। অনেক কষ্ট করে ছেলে-মেয়েদের মানুষ করেছেন, বিয়েও দিয়েছেন তাদের। এখন তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ, এই বয়সে তার কাজে থেকে অবসর নিতে পারলে ভালো হতো।
জেলা শহরের প্রবীণ বাসিন্দা শওকত উসমান বলেন, বাসার ভাইয়ের গাড়িতে আমরা কত ঘুরেছি, কোর্ট থেকে বাসায় ফিরেছি। অনেক সহজ-সরল মানুষ তিনি। তার ব্যবহার, আচার খুবই ভালো।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ পাবনা জেলা শাখার আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন শুভ বলেন, সমাজের উচ্চ শ্রেণির মানুষের উচিত, আবুল বাসারের মতো যারা আছেন তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।
আফরোজা