ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০১ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

এ বছর কমনওয়েলথ বৃত্তি পেলেন ২৬ জন বাংলাদেশি

প্রকাশিত: ১৯:১৬, ৩১ জুলাই ২০২৫

এ বছর কমনওয়েলথ বৃত্তি পেলেন ২৬ জন বাংলাদেশি

ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশনের যৌথ উদ্যোগে ২০২৫ সালের কমনওয়েলথ বৃত্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি প্রি-ডিপারচার ব্রিফিং ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বাসভবনে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।

এ বছর ২৬ জন মেধাবী বাংলাদেশি যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে সম্মানজনক এ বৃত্তি অর্জন করেছেন। বৃত্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন ১৭ জন নারী শিক্ষার্থী। উচ্চশিক্ষার জন্য তাদের নির্বাচিত বিষয়ের মধ্যে রয়েছে গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মানবাধিকার, পরিবেশগত অর্থনীতি ও টেকসই উন্নয়নসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বৃত্তিপ্রাপ্তদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষার জন্য যাত্রা শুরু করা কমনওয়েলথ স্কলারদের এই সাফল্য উদযাপন করতে পেরে আমি আনন্দিত। শিক্ষাগত উন্নয়নের প্রতি তাদের একাগ্রতার মাধ্যমেই বোঝা যায়, তারা বাংলাদেশে ফিরে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন; পাশাপাশি, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে ভূমিকা রাখবেন। এ বছর বৃত্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে নারীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি আমাকে বিশেষভাবে আনন্দিত করেছে। নিঃসন্দেহে, এটি বাংলাদেশের নারী ক্ষমতায়নের অগ্রগতির এক অনন্য উদাহরণ।”

এছাড়াও, অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস। তিনি বলেন, “কমনওয়েলথ স্কলারশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক সফলতা দেখে আমরা সত্যিই গর্বিত। এ বৃত্তি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছে। তারা দেশে ফিরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অবদান রাখেন, তা যুক্তরাজ্যের বিশ্বমানের শিক্ষার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের প্রমাণ। তাই, এ বছর বৃত্তিপ্রাপ্ত সকল শিক্ষার্থীকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। নিজের দেশ ও দেশের বাইরের বৃহত্তর পরিসরে আমি তাদের সাফল্য কামনা করি।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ কমনওয়েলথ স্কলার্স অ্যান্ড ফেলোস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসসিএসএফ) সভাপতি বোরহান উদ্দিন খান স্কলারদের অভিনন্দন জানান।

কমনওয়েলথ বৃত্তি যুক্তরাজ্যের অন্যতম আন্তর্জাতিক বৃত্তি কর্মসূচি। এ বৃত্তি বৈশ্বিক উন্নয়ন, একাডেমিক সাফল্য ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সহযোগিতার প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অন্যতম মাধ্যম। ১৯৬০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দুই হাজার ছয় শ’র বেশি বাংলাদেশি এ বৃত্তি পেয়েছেন। তাদের অনেকেই বর্তমানে সরকার, শিক্ষা, সিভিল সোসাইটি এবং বেসরকারি খাতে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানটিতে স্কলারদের যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা ও পড়াশোনাকালীন সময়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস সম্পর্কিত বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হয়। বিদেশে থাকার জন্য অত্যাবশ্যক হলো সেখানকার কমিউনিটির সাথে পারস্পরিক যোগাযোগ ও পরিচিতি গড়ে তোলা; তাই, অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কেও নানা পরামর্শ প্রদান করা হয়।

কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন (সিএসসি) এ বছর ৬৫ বছরের মাইলফলক উদযাপন করছে। ছয় দশকের বেশি সময় ধরে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নমূলক বিনিময় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এই কমিশন। কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন (সিএসসি) স্কলারদের জ্ঞান এবং দক্ষতায় সমৃদ্ধ করে এসব দেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করে চলেছে।

আফরোজা

×