
ছবি: জনকণ্ঠ
উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে তিস্তার পানি বৃদ্ধি। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ১২টার তথ্য অনুযায়ী, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
হঠাৎ তিস্তায় পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়া এবং তীব্র স্রোত থাকায় জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী এলাকায় একটি পুরনো বাঁধ এবং উপজেলার উত্তর ও পূর্ব ডাউয়াবাড়ি এলাকার আরও দুটি অস্থায়ী বাঁধ ভেঙে গেছে পানির চাপে। এতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে লোকালয়ে। এছাড়া তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলগুলোও প্লাবিত হচ্ছে।
নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, দুপুরের পর থেকেই পানি বাড়তে থাকে। বিকেল নাগাদ স্রোতের গতি বেড়ে যায়, আর সন্ধ্যার পরপরই বাঁধ ভেঙে যায়। রাতভর পানি বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়ন, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন এবং তিস্তার চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। অনেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও গবাদি পশু নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের বাসিন্দা আজিজুল হক বলেন, “বিকেল পর্যন্ত পানি ছিল জমিতে। এখন ঘরের ভেতরে। গরু-ছাগল নিয়ে নিরাপদ জায়গায় যাচ্ছি।”
সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের শেলিনা বেগম বলেন, “ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে আছি। চারপাশে পানি, কোনো উপায় নেই।”
পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনিল কুমার রায় বলেন, “তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে বর্তমানে ৫২.২২ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে। ধুবনী এলাকায় একটি পুরনো বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। আগামী ২৪ ঘণ্টা পানি স্তর স্থিতিশীল থাকতে পারে, এরপর কিছুটা কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।”
এম.কে.