
ছবি: সংগৃহীত
যেকোনো সময় আবারো শুরু হতে পারে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ, এমন ইঙ্গিত বারবার উঠে আসছে দেশ দুটির সর্বোচ্চ মহল থেকেই। মধ্যপ্রাচ্যের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝেই ইরান থেকে এসেছে এক আত্মবিশ্বাসী ঘোষণা। ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাজিদ খাদেমী জানিয়েছেন, বর্তমানে ইরান অত্যন্ত ভালো নিরাপত্তা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে—সেনাবাহিনী যেমন প্রস্তুত, তেমনি জনগণও রয়েছে ঐক্যবদ্ধ।
তেহরানে এক শহীদ সম্মাননা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ব্রিগেডিয়ার খাদেমী বলেন, শত্রুরা ভেবেছিল এই আগ্রাসনের মাধ্যমে ইরানের জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরবে। কিন্তু যা হয়েছে তা পুরোপুরি উল্টো। জনগণ তাদের সহনশীলতা, বুদ্ধিমত্তা ও ঐক্যের মাধ্যমে, আর ইসলামি যোদ্ধারা সামরিক শক্তির মাধ্যমে প্রমাণ করেছে, ইরানকে পিছু হটানো সম্ভব নয়।
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হলো, খাদেমী স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির অনুরোধ এসেছে শত্রুপক্ষ থেকেই—ইরানের পক্ষ থেকে নয়। তার এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, ইরান শুধু সামরিক নয়, মনস্তাত্ত্বিকভাবেও যুদ্ধের ময়দানে নিজেদের জয়ী মনে করছে।
একই সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের 'স্ন্যাপব্যাক' হুমকি নিয়েও কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছেন খাদেমী। তিনি বলেন, ইউরোপ যদি ওই পথে অগ্রসর হয়, তবে ইরানের পক্ষ থেকেও প্রস্তুত পরিকল্পনা রয়েছে এবং এর প্রধান ভুক্তভোগী হবে ইউরোপীয়রাই। উল্লেখ্য, স্ন্যাপব্যাক হচ্ছে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি 'জেসিপিওএ'-এর আওতায় আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় কার্যকর করার একটি প্রক্রিয়া।
বিশ্লেষকদের মতে, খাদেমীর এই বক্তব্য কেবল প্রতিরক্ষা কৌশল নয়, বরং দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখারও বার্তা। ইরান বিশ্বকে দেখাতে চাইছে—বাইরের চাপ যতই থাকুক, ভেতরের ঐক্য অটুট। তেহরান যেমন সামরিকভাবে সক্ষম, তেমনি কূটনৈতিক বিকল্প পথও তারা খোলা রেখেছে।
বক্তব্যের শেষভাগে ব্রিগেডিয়ার খাদেমী বলেন, আমাদের সজাগ থাকতে হবে। শত্রু শুধু বাহ্যিক নয়, অনেক সময় তারা ভেতর থেকেও বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করতে পারে। তাই সামরিক প্রস্তুতির পাশাপাশি জনগণের সচেতনতা ও ঐক্যই হবে ইরানের সবচেয়ে বড় শক্তি।
শেখ ফরিদ