ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষ্য আঞ্চলিক জলবায়ু নিরসন

২৯ আগষ্ট শুরু হচ্ছে আফ্রিকান ক্লাইমেট উইক

কাওসার রহমান

প্রকাশিত: ১২:৫০, ১৮ আগস্ট ২০২২; আপডেট: ১৩:২৬, ১৮ আগস্ট ২০২২

২৯ আগষ্ট শুরু হচ্ছে আফ্রিকান ক্লাইমেট উইক

জলবায়ু নিরসন

আগামী ২৯ আগষ্ট শুরু হচ্ছে ৫ দিনব্যাপী জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আঞ্চলিক সম্মেলন আফ্রিকান ক্লাইমেট উইক বা আফ্রিকান জলবায়ু সপ্তাহ। আফ্রিকার দেশ গ্যাবনের রাজধানী লাইবারভিল শহরে এই সম্মেলন চলবে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

আফ্রিকান ক্লাইমেট উইক মুলত আফ্রিকান অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করার একটি প্ল্যাটফর্ম। গত কয়েক বছর ধরে আফ্রিকান দেশগুলোতে এই জলবায়ু সপ্তাহ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবারের জলবায়ু সপ্তাহে আফ্রিকান অঞ্চলের জলবায়ু ঝুঁকিসমুহ এবং জলবায়ু সহায়ক সম্ভাবনা সমুহ উঠে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্যান্য বারের মতো এবারের সম্মেলনেও আফ্রিকান দেশসমুহের মন্ত্রীরা যোগা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া এ অঞ্চলের সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি খাতের নেতৃবৃন্দ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং যুব প্রতিনিধিরা যোগ দেবেন।

সম্মেলনের মুল আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে, প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন। অর্থাৎ প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও বাধা সমুহ কী এবঙ সেগুলো কীভাব কাটিয়ে উঠা যায় সে বিষয়ে আলোকপাত করা হবে। সেই সঙ্গে এ পর্যন্ত যে সকল ক্লাইমেট এ্যাকশন গ্রহণ করা হয়েছে এবং সে সকল এ্যাকশন বাস্তায়নের কী অগ্রগতি হয়েছে তা তুলে ধরা হবে।

এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ডেপুটি এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি ওভাইস সারমাড বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই সম্মেলনে ক্লাইমেট এ্যাকশন নিয়ে ঐক্যমতে পৌছানোর চেষ্ঠা করব। সেই সঙ্গে কৌশল নির্ধারণ করব কিভাবে বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠা জলবায়ু পরিবর্তন ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতার মাধ্যমে মোকাবেলা করার যায়। আমরা এই সম্মেলনে আমাদের অংশীদারিত্ব জোরদার করব এবং সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্রে চিহ্নিত করব। পাশাপাশি আগামী নবেম্বরে মিশরের শার্ম-ই শেখ শহরে অনুষ্ঠিতব্য ২৭তম জলবায়ু সস্মেলনের জন্য অর্থবহ পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

আসন্ন সম্মেলন সম্পর্কে গ্যাবনের প্রেসিডেন্টের বিশেষ উপদেষ্টা টানগাই গাহুমা বলেন, বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। ইতোমধ্যে আফ্রিকান দেশসমুহে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। গ্যাবন এবারের আফ্রিকান উইকের আয়োজক হতে পেরে আনন্দিত। আশা করছি, এই অঞ্চলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিশেষজ্ঞ এবং অংশীজনরা জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। 

তিনি বলেন, প্যারিস চুক্তি আমাদেরকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় পদক্ষেপ গ্রহণের দিক নির্দেশনা দিয়েছে। সেই সঙ্গে এই বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পৃথিবীকে রক্ষার জন্য একসঙ্গে কাজ করার পথও তৈরি করে দিয়েছে। আশা করি, আফ্রিকান উইকের সিদ্ধান্ত সমুহ আমাদেরকে মিশরে যাওয়ার পথকে সুগম করে দেবে।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচীর সহায়তায় গ্যাবন সরকার এবং জাতিসংঘ ক্লাইমেট জেঞ্জ এই জলবায়ু সপ্তাহের আয়োজন করছে। এতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা যোগ দেবে। সম্মলনে জলবায়ু পরিবর্তনের আঞ্চলিক ঝুকি মোকাবেলা, টেকসই সমাধান উদ্ভাবন এবং জলবায়ু এ্যাকশনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সমুহ উঠে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

এর আগে গত ১৮ থেকে ২২ জুলাই ডমিনিকান রিপালিকর সান্তো ডমিঙ্গোতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান ক্লাইমেট উইক। এতে ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয় অঞ্চলের দেশগুলোর মন্ত্রী, বিশেষজ্ঞ, বেসরকারি খাত নেতৃবৃন্দ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা যোগ দেন। বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় এই অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনীতিকে কম কার্বন নিঃসরণের অর্থনীতিতে রূপান্তর এবং জলবায়ুর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অংশীদারিত্ব জোরদারে গুরুত্বারোপ করা হয়।

×