ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০টি পাখি ও তাদের আবাসস্থল

প্রকাশিত: ১২:০৯, ১৪ জুলাই ২০২৫

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০টি পাখি ও তাদের আবাসস্থল

ছ‌বি: সংগ্রহীত।

বিশ্বজুড়ে কিছু পাখি আকারে এতটাই বিশাল যে তাদের উপস্থিতি দেখে বিস্মিত হতে হয়। এদের অনেকেই উড়তে না পারলেও গতিশীলতা, গঠন ও বৈচিত্র্যে অনন্য। নিচে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০টি পাখি ও সেগুলো কোথায় পাওয়া যায়, তা তুলে ধরা হলো:

১. সোমালি অস্ট্রিচ – আফ্রিকার হর্ন অঞ্চল:
সোমালিয়া, ইথিওপিয়া ও কেনিয়ায় পাওয়া যায় সোমালি অস্ট্রিচ। এটি প্রায় ২.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। সাধারণ অস্ট্রিচের চেয়ে এর গলা নীল এবং এটি শুষ্ক অঞ্চলে থাকতে বেশি পছন্দ করে।

২. এমু – অস্ট্রেলিয়া:
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় পাখি এমু প্রায় ১.৯ মিটার লম্বা এবং ওজনে ৫৫ কেজি পর্যন্ত হয়। এটি উড়তে না পারলেও ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার গতিতে দৌড়াতে সক্ষম।

৩. সাদার্ন ক্যাসোয়ারি – অস্ট্রেলিয়া ও নিউ গিনি:
এই পাখিটির ওজন ৭৬ কেজি পর্যন্ত এবং উচ্চতা ১.৮ মিটার। মাথার উপরের হেলমেটের মতো অংশ ও শক্তিশালী পা দিয়ে পরিচিত। এটি ঘন বৃষ্টিবন এলাকায় বাস করে এবং অত্যন্ত এলাকা-নির্ভরশীল।

৪. অস্ট্রিচ – আফ্রিকা:
বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাখি অস্ট্রিচ, যার উচ্চতা ২.৭ মিটার পর্যন্ত এবং ওজন ১৬০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। আফ্রিকান এই পাখিটি উড়তে না পারলেও ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার গতিতে দৌড়াতে পারে।

৫. নর্দার্ন ক্যাসোয়ারি – নিউ গিনি:
উচ্চতা ১.৭ মিটার এবং ওজন প্রায় ৭০ কেজি হওয়া এই পাখিটি নিউ গিনির উত্তরাংশের নিম্নভূমির বনে বাস করে। এটি সাদার্ন ক্যাসোয়ারির চেয়ে কিছুটা কম বর্ণময় হলেও একইভাবে নিঃসঙ্গ ও দুর্লভ।

৬. ডোয়ার্ফ ক্যাসোয়ারি – নিউ গিনি হাইল্যান্ডস:
ক্যাসোয়ারি প্রজাতির মধ্যে এটি সবচেয়ে ছোট, যার উচ্চতা ১.৪ মিটার। নিউ গিনির পার্বত্য অঞ্চলে পাওয়া যায় এই পাখি, যার গঠন শক্ত ও কমপ্যাক্ট, পাহাড়ি বনাঞ্চলের জন্য উপযোগী।

৭. গ্রেটার রিয়া – দক্ষিণ আমেরিকা:
দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম পাখি গ্রেটার রিয়ার উচ্চতা ১.৫ মিটার এবং ওজন প্রায় ৪০ কেজি। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ের ঘাসভূমি ও পাম্পাস এলাকায় বাস করে। এটি উড়তে পারে না।

৮. লেসার রিয়া – প্যাটাগোনিয়া ও আন্দিজ:
ডারউইনের রিয়া নামেও পরিচিত এই পাখিটি গ্রেটার রিয়ার চেয়ে কিছুটা ছোট—উচ্চতা ১.২ মিটার পর্যন্ত। এটি প্যাটাগোনিয়া ও আন্দিজ মালভূমির শীতল, শুষ্ক পরিবেশে টিকে থাকে।

৯. কিং পেঙ্গুইন – সাব-আন্টার্কটিক দ্বীপপুঞ্জ:
উচ্চতা প্রায় ১ মিটার এবং ওজন ১৮ কেজি পর্যন্ত হয় কিং পেঙ্গুইনের। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঙ্গুইন প্রজাতি। দক্ষিণ জর্জিয়া ও ফকল্যান্ড দ্বীপে বড় কলোনি গড়ে তোলে।

১০. এম্পেরর পেঙ্গুইন – আন্টার্কটিকা:
এটি বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ও ভারী পেঙ্গুইন। উচ্চতা ১.২ মিটার এবং ওজন ৪০ কেজি পর্যন্ত। -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের তাপমাত্রাতেও টিকে থাকার উপযোগী এই প্রজাতিটি আন্টার্কটিকার বরফের ওপর ডিম পাড়ে।

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের এই বিশাল পাখিরা প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রাণীবৈচিত্র্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যাদের সংরক্ষণ এবং পর্যবেক্ষণ আমাদের পরিবেশগত সচেতনতার অংশ হওয়া উচিত।

মিরাজ খান

×