ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

প্রকাশ্যে এমন হত্যা, বিনা বাধায় ভিডিও ধারণ—জনমনে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত: ১৪:৩৪, ১৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৪:৩৫, ১৪ জুলাই ২০২৫

প্রকাশ্যে এমন হত্যা, বিনা বাধায় ভিডিও ধারণ—জনমনে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে: মির্জা ফখরুল

রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় লালচাঁদ সোহাগ হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “প্রকাশ্যে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটার পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো প্রতিরোধ না থাকা এবং হত্যার পুরো ঘটনা ভিডিও ধারণ হওয়া—জনমনে গুরুতর প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।”

সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ফখরুল বলেন, “এই হত্যা মামলায় যেসব ব্যক্তির নাম এসেছে, তাদের অনেকেই নিহতের পরিবারের কাছে অপরাধী নন। অথচ তাদেরকেই মামলায় আসামি করা হয়েছে।”

বিএনপি এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে বলেও জানান ফখরুল। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, “এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে বিএনপি ও এর শীর্ষ নেতৃত্বকে অপমান ও অপদস্থ করার পরিকল্পনা করছে একটি চিহ্নিত মহল।”

ফখরুল বলেন, “এই ঘটনা জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অংশ কি না—তা নিয়েও সন্দেহের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। বরং আমরা দেখি, কুমিল্লা, খুলনা, মুরাদনগরে যেসব ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেখানে একই ধরনের প্রতিবাদ হয়নি। তাহলে প্রশ্ন ওঠে—এখানে আসল উদ্দেশ্য কী?”

ফখরুল জানান, “আমরা স্পষ্টভাবে বিশ্বাস করি—অপরাধীর কোনো দলীয় পরিচয় থাকতে পারে না। ব্যক্তি অপরাধের দায় দল নেবে না। সেই কারণে ঘটনাটির অন্তর্নিহিত কারণ অনুসন্ধানে আমরা একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করছি, যারা সত্য উদঘাটন করে তা জনসমক্ষে তুলে ধরবে।”

তিনি আরও বলেন, “পুলিশের তদন্ত রিপোর্টেও বলা হয়েছে, এটি কোনো চাঁদাবাজি নয়; এটি একটি ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বজনিত হত্যাকাণ্ড। অথচ একে দলীয় রঙ দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা চলছে, যা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক।”

তিনি আরও বলেন, প্রকাশ্যে দিবালোকে, অসংখ্য মানুষের সামনে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিকটবর্তী অবস্থানে ঘটনা ঘটলেও কোনো ধরনের প্রতিরোধ না হওয়ায় পুরো বিষয়টি নিয়ে জনমনে গুরুতর প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য থেকে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য উদ্ঘাটিত হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সরকার পরিচালনার দায়িত্বে না থাকা সত্ত্বেও একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল এবং তার শীর্ষ নেতৃত্বকে দায়ী করে যেভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও অশ্লীল ভাষার ব্যবহার করা হয়েছে, তা দেশে আবারও রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে কিনা—এ প্রশ্নও আজ জনমনে জেগে উঠেছে। 

"এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ব্যক্তি পরিচয় নয়; বরং তিনি দেশের একজন নাগরিক, যিনি সন্ত্রাসের নির্মম শিকার। ফলে, তার পরিবারের সঙ্গে আমরাও এই ঘৃণ্য অপকর্মের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।"

তিনি আরও বলেন, কিন্তু এ বিষয় নিয়ে যারা রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট এবং জাতীয় নির্বাচনকে বাধাগ্রস্থ ও অনিশ্চিত করতে চান, প্রকারান্তরে ফ্যাসিবাদ উত্থানের পথ যারা সৃষ্টি করতে চান তাদেরকে চিহ্নিত করা ও প্রতিহত করার প্রত্যয়ও একই সাথে আমরা উচ্চারণ করতে চাই। 

সানজানা

×