ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

থাইল্যান্ড ভ্রমণে দেখা মিলতে পারে এমন ১০টি দুর্লভ ও চমকপ্রদ প্রাণী

প্রকাশিত: ১৩:০৮, ১৪ জুলাই ২০২৫

থাইল্যান্ড ভ্রমণে দেখা মিলতে পারে এমন ১০টি দুর্লভ ও চমকপ্রদ প্রাণী

ছ‌বি: সংগ্রহীত।

থাইল্যান্ড শুধু ঐতিহাসিক মন্দির, সাদা বালুর সৈকত ও প্রাণবন্ত শহর নয়—প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এই দেশ একটি আদর্শ গন্তব্য। এখানকার বনে-জঙ্গলে, দ্বীপে ও সংরক্ষিত পার্কে এমন কিছু বিরল ও অবিশ্বাস্য প্রাণীর দেখা মেলে, যাদের অনেকেই আজ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। নিচে থাইল্যান্ড ভ্রমণে আপনি যেসব চমকপ্রদ প্রাণীর মুখোমুখি হতে পারেন, এমন ১০টি প্রাণী সম্পর্কে তুলে ধরা হলো—

১. টোকে গেকো (Tokay Gecko):
বিশ্বের বৃহত্তম গেকো প্রজাতিগুলোর একটি টোকে গেকো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাওয়া যায়। এই গেকো সাধারণত মানুষের বাসস্থানের আশপাশেই থাকতে পছন্দ করে এবং কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

২. কিং কোবরা (King Cobra):
বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা বিষধর সাপ কিং কোবরা। এটি ঘন পাহাড়ি বন ও তৃণভূমিতে বাস করে। ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায়, কিং কোবরা আসলে একটি নয়, বরং চারটি আলাদা প্রজাতির সমন্বয়।

৩. সায়ামিজ কুমির (Siamese Crocodile):
মাঝারি আকৃতির এই মিঠাপানির কুমির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় প্রজাতি। তবে বনে এদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে এখনও অনেক অজানা রয়ে গেছে। এই প্রজাতি বর্তমানে অত্যন্ত বিপন্ন তালিকাভুক্ত।

৪. লার গিবন (Lar Gibbon):
সাদা-হাতযুক্ত গিবন নামেও পরিচিত, এই প্রাইমেট বর্তমানে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। এদের লোমের রং কালো ও গাঢ় বাদামি থেকে শুরু করে হালকা বালুকাময় রঙ পর্যন্ত হতে পারে।

৫. হুয়েল শার্ক (Whale Shark):
বিশ্বের বৃহত্তম জীবিত মাছ প্রজাতি হুয়েল শার্ক ধীরগতির ও ফিল্টার-ফিডার শ্রেণির। থাইল্যান্ডের কোহ টাও দ্বীপ হুয়েল শার্ক দেখার অন্যতম উপযুক্ত স্থান। এটি শান্ত ও নিরীহ প্রজাতি।

৬. ইন্দোচাইনিজ টাইগার (Indochinese Tiger):
এই টাইগার প্রজাতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় এবং Panthera tigris tigris উপপ্রজাতির অংশ। বর্তমানে বেঁচে থাকা ইন্দোচাইনিজ টাইগারদের অর্ধেকের বেশি থাইল্যান্ডের ওয়েস্টার্ন ফরেস্ট কমপ্লেক্স অঞ্চলে দেখা যায়।

৭. রেটিকুলেটেড পাইথন (Reticulated Python):
বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা সাপ হিসেবে পরিচিত রেটিকুলেটেড পাইথন দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় প্রজাতি। বিস্তৃত বিস্তৃতির কারণে এটি IUCN-এর ‘কম ঝুঁকিপূর্ণ’ তালিকায় রয়েছে।

৮. সুন্দা প্যাঙ্গোলিন (Sunda Pangolin):
এই বর্মযুক্ত স্তন্যপায়ী প্রাণী প্রধানত বনাঞ্চলে বাস করে—প্রাথমিক, সেকেন্ডারি ও ঝোপঝাড়ে। এটি রাবার ও তেল পাম চাষের এলাকাতেও দেখা যায়। বেশিরভাগ সময় গাছে গাছে চলাফেরা করে।

৯. ইন্দোচাইনিজ শিয়াল (Indochinese Jackal):
গোল্ডেন জ্যাকাল নামেও পরিচিত এই প্রাণী পাহাড়ি এলাকা, কৃষিজমি ও গ্রামীণ বনাঞ্চলে বাস করে। এর শিকার সাধারণত পাখি, সরীসৃপ ও ব্যাঙজাতীয় প্রাণী। এর তেমন কোনো স্বাভাবিক শত্রু নেই।

১০. ডাসকি লিফ বানর (Dusky Leaf Monkey):
স্পেকট্যাকলড ল্যাঙ্গুর নামেও পরিচিত, এই প্রাইমেট কাও সক জাতীয় উদ্যানে দেখা যায়। IUCN-এর মতে, বাসস্থানের ক্ষতি ও চোরাশিকারের কারণে এই বানরের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে।

থাইল্যান্ডের এই প্রাণীজগৎ প্রমাণ করে দেশটি শুধু পর্যটন নয়, বরং প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যেও কতটা সমৃদ্ধ। এই প্রাণীগুলোর সংরক্ষণ আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় অত্যন্ত জরুরি।

মিরাজ খান

×