ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

ভারত থেকে বাংলাদেশে জোরপূর্বক পুশব্যাক, কিন্তু কেন? 

প্রকাশিত: ১৮:৩১, ১৪ জুলাই ২০২৫

ভারত থেকে বাংলাদেশে জোরপূর্বক পুশব্যাক, কিন্তু কেন? 

ভারত থেকে বাংলাদেশে জোরপূর্বক পুশব্যাক

২০২৪ সালের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ থেকে ভারতে  অনুপ্রবেশ কিছুটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে ভারত থেকে বাংলাদেশে জোরপূর্বক মানুষ পুশব্যাকের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সখ্যতা হঠাৎ ভেঙে যাওয়ায় নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে এমন বিমাতাসূলভ আচরণ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ অনেকের। 

ভারত সরকার সম্প্রতি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দেশজুড়ে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো ও সীমান্তে ঠেলে দেয়ার (পুশব্যাক) অভিযান জোরদার করা হয়েছে। অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে হঠাৎ কেন এমনভাবে পুশব্যাকের মাত্রা বেড়ে গেল? 

২০২৪ সালের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ থেকে ভারতে  অনুপ্রবেশ কিছুটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে ভারত থেকে বাংলাদেশে জোরপূর্বক মানুষ পুশব্যাকের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সখ্যতা হঠাৎ ভেঙে যাওয়ায় নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে এমন বিমাতাসূলভ আচরণ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ অনেকের। 

কেউ কেউ ঢুকছে সীমান্তবর্তী ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গে। তরুণদের টার্গেট করে দালাল চক্র, যাদের মাধ্যমে প্রতিজনের কাছ থেকে ৩০-৫০ হাজার রুপি নেয়া হচ্ছে। ভারতে পৌঁছে ভুয়া পরিচয়পত্র (আধার, জন্ম সনদ, লাইসেন্স) সংগ্রহ করে নিরাপদ এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করছে। অনুপ্রবেশকারীদের অনেকেই হিন্দু নাম গ্রহণ করছে, ফলে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ছে। কিছু সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যরাও অনুপ্রবেশ করেছে। 

রোহিঙ্গারাও ভুয়া পরিচয়পত্র দিয়ে ভারতে ঢুকছে। যাকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করছেন অনেকে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সাময়িকী দ্য ডিপ্লোম্যাটে সোমবার (১৪ জুলাই) প্রকাশিত প্রবন্ধে এসব উঠে এসেছে। 

চলতি বছরের ৭ মে থেকে ১১ জুনের মধ্যে প্রায় দুই হাজার ৫০০ জনকে সীমান্তে ঠেলে দেয়া হয়েছে। আসাম সরকার ১৯৫০ সালের একটি পুরোনো আইন ব্যবহার করে এটি কার্যকর করছে। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, উত্তরপ্রদেশে ভুয়া সনদ তৈরি চক্র ধরা পড়েছে। ফাঁকা সীমান্তে এখনো কাঁটাতার দেয়া অসম্পূর্ণ, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে। আইনি প্রক্রিয়ায় প্রত্যাবাসন সময়সাপেক্ষ ও অনিশ্চিত।

বাংলাদেশ সরকার অনেক ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করতে চায় না।তাই ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আদালতের ঝামেলা এড়িয়ে সরাসরি সীমান্তে ঠেলে দেয়ার কৌশল নিয়েছে। যদিও এই প্রক্রিয়ায় ভারতীয় নাগরিকও ভুলক্রমে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হয়েছে, যা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।ভারতের আশঙ্কা, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে, যা ভারতের জন্য কৌশলগত হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
 
 

তাসমিম

×