ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অর্ধ-শতাব্দীর সীমানা পেরিয়ে

সাহিত্য-সংস্কৃতিতে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা

অনীক মাহমুদ

প্রকাশিত: ০০:৪২, ২৬ মার্চ ২০২৪

সাহিত্য-সংস্কৃতিতে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা

আমাদের স্বাধীনতার যাত্রাযান অর্ধ-শতাব্দীর সীমানা ছাড়িয়ে

আমাদের স্বাধীনতার যাত্রাযান অর্ধ-শতাব্দীর সীমানা ছাড়িয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। প্রতি বছরের মতো ২০২৪ সাল-তামামির বাতাবরণে আরেকটি ২৬ মার্চকে সাড়ম্বরে ধারণ করল। আমাদের অর্জিত সাফল্য ও জাতির জনকের ঈপ্সিত সোনার বাংলার বিনির্মাণ কতটুকু সম্ভাবনায় সমন্বিত হলো এতদ্বিষয়ে অনেকেই ভাবেন এবং কথা বলেন। দেশের নাগরিক হিসেবে এবং শিল্পসাহিত্যের পরিবৃত্তে একজন নগণ্যকর্মী হিসেবে আমাকেও ভাবিত করে।

এই ভাবনা তরঙ্গে আমি আশা-নিরাশার অভিঘাতে আন্দোলিত হই বটে। এটাও ভাবি জাতির জনকের স্বপ্নময় স্বাধীনতার মর্মার্থ একদিন আপামর জনমনে সদর্থক ভূমিকা রাখবে। জেগে উঠবে দেশের হৃদয়- জাগবে মুক্ত বিবেচনাবোধ। সকল ক্ষেত্রে দেশপ্রেমই হবে সর্বজনীন মাহাত্ম্য সঞ্চারক। বাংলা সাহিত্য বাঙালির শিল্প-সংস্কৃতির পরিবৃত্তের একটি প্রধান উইং। মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ও জঙ্গমতার প্রতিটি স্তরে এদেশের কবি-সাহিত্যিক-শিল্পীরা যে শিল্পাস্ত্র শাণিয়ে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন তা জাতীয় চেতনার গতিকে দুর্বার করে তুলতে সহায়তা করেছে।

আজকে মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশোর্ধকালে পেছনে ফেরে তাকালে মনে হয় মুক্তির মন্ত্রণায় অস্ত্র হয়তো কোষবদ্ধ হয়েছে কিন্তু কলমের সঞ্চালনার নিবৃত্তি ঘটেনি। কবি-সাহিত্যিক শিল্পীরা আজও স্বপ্নাতুর স্বাধীনতায় মর্মবাণী ও মর্মালোক স্পর্শ করে কলম শাণিয়ে চলেছেন। হয়তো সোনার বাংলার স্বপ্নপূরণের দিগন্ত না ছোঁয়া পর্যন্ত এ-প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। 
ভাষা-আন্দোলনকে আমরা আমাদের স্বাধীনতার প্রসূতি বলি। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির পর ক্রমাগত ভাষা-ভিত্তিক বাঙালি জাতীয়তাবোধের একসূত্রিক আদর্শ যে চেতনার ধারা পরিপুষ্ট করে তা রাজনৈতিক অঙ্গনে বেগবান হয়। আটান্ন সালের সামরিক আইনবিরোধী আন্দোলন, বাষট্টির ছাত্র-আন্দোলন, চৌষট্টির নির্বাচন, পঁয়ষট্টির রেলশ্রমিক আন্দোলন, ছিষট্টির স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন এবং ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির এক একটি দীপ্ত মাইলফলক।

বাংলা, বাঙালি, নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতির উত্তরাধিকার-তাড়না এবং মূলধারার জীবন সংবেদের প্রতি অনুরাগ পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের সাহিত্য ধারণ করতে শুরু করে। ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ গ্রন্থ, মুনীর চৌধুরীর নাটক ‘কবর’ (রচনা-১৯৫৩) থেকে শুরু করে ষাটের দশকের আলাউদ্দিন আল আজাদের ‘মানচিত্র’, শামসুর রাহমানের ‘রৌদ্র করোটিতে’, ‘নিজ বাসভূমে’, আলমাহমুদের ‘লোক-লোকান্তর’, ‘কালের কলম’ প্রভৃতির মধ্য দিয়ে এদেশের মূলধারার মাটি ও মানুষের আর্তি পরিব্যাপ্ত।
১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন থেকে সত্তরের নির্বাচন ও একাত্তরের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ যেভাবে বাঙালির স্বাধীন স্বভূমি প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে গেছে সেখানে এদেশের কবি ও সাহিত্যশিল্পীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিজেদের শামিল করেছেন। কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। কেউ কেউ কলমযুদ্ধের মাঠে হয়েছেন অবতীর্ণ। একাত্তরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যাঁরা কবিতা পড়েছেন, কথিকা পাঠ করেছেন তাঁরাও ছিলেন জাতির অমৃতস্যপুত্র।

কবি আবদুস সালামের একটি আবেদন (২৬ মার্চ ’৭১), বেলাল মোহাম্মদ-এর ‘প্রথম কথিকা’ (২৮ মার্চ ’৭১), এরপর মোস্তফা আনোয়ার-এর ‘সাম্প্রদায়িকতা : সামন্তবাদ প্রসঙ্গ’, সিকান্দার আবু জাফর-এর তিন কিস্তিতে প্রচারিত ‘ইস্তেহার’, এম আর আকতার মুকুলের ‘চরমপত্র’, মাহবুব তালুকদারের ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের কবিতা’ (১১ জুন ’৭১ এ প্রচারিত), মযহারুল ইসলামের ‘দৃষ্টিপাত’, রণেশ দাশগুপ্তের ‘দৃষ্টিপাত’, অধ্যাপক আব্দুল হাফিজ-এর ‘দৃষ্টিপাত’, কল্যাণ মিত্রের নাটিকা ‘জল্লাদের দরবার’, আনিসুজ্জামানের ‘অমর ১৭ সেপ্টেম্বর স্মরণে’, ফয়েজ আহমদ-এর পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিতে, বেগম মুশতারী শফীর ‘রণাঙ্গনে বাংলার নারী’, শওকত ওসমানের ‘ইয়াহিয়া জবাব দাও’ এরূপ অসংখ্য কথিকা, নাট্য, প্রতিবেদন রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারের মনোবল বৃদ্ধি করেছে।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জন্য উদ্দীপনাময় গীত রচনা করলেন গাজী মাযহারুল আনোয়ার, ফজল-এ খোদা, নঈম গওহর, সিকানদার আবু জাফর, সৈয়দ শামসুল হুদা, আবদুল লতিফ, আল মুজাহিদী, টি.এইচ. শিকদার, হাফিজুর রহমান প্রমুখ। বাঙালির যুদ্ধ সংগ্রামে আত্মিক সহমর্মিতা জ্ঞাপন করে গান লিখলেন পশ্চিমবঙ্গের গীতকবি গোবিন্দ হালদার, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার প্রমুখ।

কবিতা পাঠ করলেন, শিকদার ইবনে নূর, সৈয়দ আলী আহসান, নেওয়াজিস হোসেন, নাসিম চৌধুরী, আসাদ চৌধুরী, টি.এইচ. শিকদার, অনু ইসলাম, মোহাম্মদ রফিক, মযহারুল ইসলাম, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মুসা সাদেক, রফিক নওশাদ, প্রণব চৌধুরী, আবুল কাসেম সন্দ্বীপ প্রমুখ। 
কবি ও সাহিত্যশিল্পীদের নানান আভরণ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমে ২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকে ২ জানুয়ারি ১৯৭২ পর্যন্ত বাংলার মুক্তিপিপাসু জনমনে ছিল একান্ত উদ্দীপনা সঞ্চারী। যুদ্ধের নয় মাস যাঁরা অস্ত্র হাতে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে মুখোমুখি হতে পারেননি তারা কলম যুদ্ধে শামিল হয়েছেন। হয়ে উঠেছিলেন একান্ত প্রেরণার আধার।

অপরপক্ষে যাঁরা দেশের ভেতরে আত্মগোপন করেছিলেন, হৃদয়ে ধারণ করেছেন স্বাধীন বাংলাদেশের অবিনাশী অস্তিত্বের উন্মাদনা তাঁরাও এ সময় কলম থামাননি। এরূপ কবিদের মধ্যে আমরা পেয়েছি শামসুর রাহমান, হাসান হাফিজুর রহমান। পল্লীকবি জসীমউদ্দীনও দেশের মধ্যে থেকে তুজম্বর আলি নামে কবিতা লিখেছেন।

পরবর্তীকালে এগুলো ‘ভয়াবহ সেই দিনগুলোতে’ শীর্ষক গ্রন্থাকারে প্রকাশ লাভ করে ১৯৭২ সালে। যুদ্ধের মধ্যে কথাশিল্পী আনোয়ার পাশা ‘রাইফেল-রোটি-আওরাত’ রচনা করেছিলেন। শওকত ওসমান রচনা করেছিলেন ‘জাহান্নম হইতে বিদায়’। শহিদ আনোয়ার পাশার উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে। 
মুক্তিযুদ্ধের রণদামামা থেমে গেল ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্ব লাল সবুজের পতাকায় দীপ্তিমান হয়ে উঠলো। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ জাতির জনক পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগার থেকে ফিরে এলেন। আমাদের কবি, কথাশিল্পী, লেখকগণের কলম থামলো না। তাঁরা চেতনার অমিত আধার। চেতনা কখনো থামে না। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও প্রাসঙ্গিকতা বহুমাত্রিক অবয়ব নিয়ে আমাদের কবি-লেখক শিল্পীদের হৃদয়ে অনন্ত প্রেরণা সঞ্চার করলো।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রসারণে এই লেখাগুলো মানুষের অন্তরে স্থায়ীভাবে সংবেদ সৃষ্টি করতে সাহায্য করেছে। এ জন্য স্বাধীনতা উত্তরকালে মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর নিয়ে আজ পর্যন্ত নানান মাত্রায় গবেষণা হয়েছে। চিহ্নিত হয়েছে গণকবর। নানান জায়গায় উঠেছে শহীদ মিনার। বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে শহীদ মিনারই হয়ে আছে শপথের পীঠস্থান। 
মুক্তিযুদ্ধের পূর্বের আন্দোলন সংগ্রাম, নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন, হানাদার নিধন, অপারেশন, নারী নির্যাতন, রাজাকার, আল শামস, আলবদর বাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতন এগুলো নিয়ে আমাদের কবি ও সাহিত্যশিল্পীরা অজ¯্র ছোটগল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের জন্য এদেশের নিরীহ মানুষের আত্মত্যাগ ও জীবন বলিদান কতটা সদর্থক ছিল তা আমাদের সাহিত্যশিল্প বহুমাত্রিক অবয়বে জীবন্ত করে তুলে। সাহিত্যের সঙ্গে ইতিহাসের পার্থক্য একটি জায়গায়- সেটি হচ্ছে ইতিহাস- মৃত মানুষের কাহিনী।

এখানে সত্যের জায়গায় কল্পনার ঠাঁই নেই। সাহিত্য জীবনের সহিত, কল্যাণের সহিত একীভূত হয় বলে এর কাহিনী জীবন্তরূপ পরিগ্রহ করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় নীলক্ষেত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে অপারেশন সার্চ লাইটের নামে হানাদার বাহিনী যে গণহত্যা চালায় সেগুলোর জীবন্ত বর্ণনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শহিদ আনোয়ার পাশা তাঁর ‘রাইফেল-রোটি-আওরাত’ উপন্যাসে। আনোয়ার পাশা শহিদ বুদ্ধিজীবী। ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ তিনি হানাদার বাহিনীর দোসরদের হাতে নিহত হন।

১৯৭৩ সালে তাঁর এই উপন্যাস রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা গবেষণা সংসদের উদ্যোগে প্রকাশিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় রচিত হয় শওকত ওসমানের ‘জাহান্নম হইতে বিদায়’ উপন্যাসটি। এটি প্রকাশিত হয় কলকাতা থেকে ১৯৭১ সালেই। তাঁর অপর তিনটি উপন্যাস ‘দুই সৈনিক’ (১৯৭৩), ‘নেকড়ে অরণ্য’ (১৯৭৩), ‘জলাঙ্গী’ (১৯৭৪) যুদ্ধকালীন ঘটনার সন্নিবেশ থেকে লিখিত।

এরপর আমাদের খ্যাতিমান কথাকোবিদরা অনেকেই এগিয়ে এসেছেন মুক্তিযুদ্ধের প্রাতিস্বিকতায় উপন্যাস রচনায়। এই ধারাবাহিকতায় রচিত হয়েছে রাবেয়া খাতুনের ‘ফেরারী সূর্য’ (১৯৭৪), রশীদ হায়দারের ‘খাঁচায়’ (১৯৭৫), ‘অন্ধকথামালা’ (১৯৯২), সেলিনা হোসেনের ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ (১৯৭৬), শওকত আলীর ‘যাত্রা’ (১৯৭৬), সৈয়দ শামসুল হকের ‘নিষিদ্ধ লোবান’ (১৯৮১), ‘নীলদংশন’ (১৯৮২) প্রভৃতি।

অপেক্ষাকৃত পরের লেখকরাও মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস রচনায় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। আজও মুক্তিযুদ্ধের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কথাশিল্পের মৃত্তিকায় কর্ষণের কমতি নেই। রাজনীতিবিদরা সার্বভৌম বাংলাদেশের মানচিত্রের বিনির্মাণে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতির জনক। সেই ইতিহাস লিখেছেন ইতিহাসবিদরা। এর জীবন্ত শিল্পমূর্তি রচনা করেছেন কথাকোবিদরা। শুধু উপন্যাস নয় অসংখ্য-অজ¯্র ছোটগল্পের আঙিনায় এই মুক্তিযুদ্ধ বহুধা চিত্রে অঙ্কিত হয়েছে।

সৃজনশীল কথাশিল্পের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা নিয়েও আমাদের লেখকরা এগিয়ে এসেছেন। তাঁরা মনে করেছেন একাত্তরের যুদ্ধমত্ত নয় মাসের যে অবর্ণনীয় কষ্ট, অত্যাচার, গ্লানিতে যে জীবনের ভয়াবহ পরিণাম বাঙালির উপরে নির্মমতা দেখিয়েছে তা প্রজন্মকে জানানো দরকার। বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীরের ‘জার্নাল’ (১৯৭৩), জহুরুল হকের ‘নিষিদ্ধ নিশ্বাস’ (১৯৭৪), জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলো’ (১৯৮৬), শওকত ওসমানের ‘কালরাত্রি খ-চিত্র’ (১৯৮৬), বেগম সুফিয়া কামালের ‘একাত্তরের ডায়েরি’ (১৯৮৯), রাবেয়া খাতুনের ‘একাত্তরের নয় মাস’ (১৯৯১), বাসন্তীগুহ ঠাকুরতার ‘একাত্তরের স্মৃতি’ (১৯৯১) প্রভৃতি।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে যখন এদেশে এক সময় ভিন্ন রকম চিন্তা করা হচ্ছিল তখন আমাদের নারী লেখকরা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণায় এগিয়ে এসেছেন। বেগম মুশতারী শফীর ‘স্বাধীনতা আমার রক্তঝরাদিন’ (১৯৮৯), বেগম নূরজাহানের ‘একাত্তরে আমি’ (১৯৮৫), নূর হাসনা লতিফের ‘পাকিস্তানের আটক দিনগুলো’ (১৯৯০) ইত্যাদি স্মৃতিকথা এ বিষয়ে স্মর্তব্য।

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম এগিয়ে এসেছেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি নিয়ে। বসিয়েছিলেন গণআদালত। মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বাধীনতার লাল সূর্যের বিজয়ের উদগাথা। সর্বস্তরের মানুষের রক্তের পারিজাতে আমরা অর্জন করেছি এই স্বাধীনতা। ইতোমধ্যে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত। কিন্তু বিজয়ের এই চেতনা এখনো প্রসারিত হচ্ছে।

এখনো এর জন্য ত্যাগের মহিমা ও মাহাত্ম্যের শৈল্পিক অনুরাগের কমতি নেই। আমরা নিশ্চয়ই প্রজন্ম পরম্পরা স্বাধীনতার সুফল সাহিত্য-শিল্প-সংস্কৃতির বাতাবরণে একে আরও নন্দিত করে এগিয়ে যাব আজকের দিনে এটুকুই প্রত্যাশা।

×