
ছবি: সংগৃহীত।
বিশ্বের প্রায় ১০ শতাংশ জনগণ আগ্নেয়গিরির ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় ও আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ সম্পর্কে আগাম ধারণা পেতে নাসা মহাকাশ থেকেই আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ করছে।
নাসা জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত পরিবেশ, জলবায়ু এবং মানবজীবনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। এসব কারণেই মহাকাশ থেকে উপগ্রহের মাধ্যমে আগ্নেয়গিরি এবং সংশ্লিষ্ট পরিবেশগত পরিবর্তনগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাছের পাতার পরিবর্তনের মাধ্যমেও কাছাকাছি কোনো আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের পূর্বাভাস পাওয়া যেতে পারে। এই ধরনের পরিবর্তন মহাকাশ থেকেই শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।
এই পর্যবেক্ষণে ব্যবহার করা হচ্ছে একাধিক উপগ্রহ ও যন্ত্রপাতি। যেমন:
Landsat 8 ও 9 – আগ্নেয়গিরির উচ্চ রেজোলুশনের ছবি ও ছাইয়ের অবস্থান প্রদর্শন করে।
Sentinel-5P – সালফার ডাইঅক্সাইডসহ অন্যান্য আগ্নেয়গিরির গ্যাস শনাক্ত করে।
GOES-R Series – আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ও ছাইয়ের মেঘের তাৎক্ষণিক ছবি সরবরাহ করে।
MODIS – বায়ুমণ্ডলে থাকা আগ্নেয়গিরির ছাই ও কণার উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে।
নাসার এমস রিসার্চ সেন্টারের আর্থ সায়েন্স বিভাগের প্রধান এবং ভূতাত্ত্বিক ফ্লোরিয়ান স্কভান্ডনার বলেন, “আগ্নেয়গিরির জন্য প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা আগে থেকেই রয়েছে। আমরা সেটিকে আরও নিখুঁত এবং আগেভাগেই কার্যকর করতে চাই।”
তিনি আরও জানান, এই উদ্যোগে তাঁর সঙ্গে যুক্ত আছেন চ্যাপম্যান ইউনিভার্সিটির জলবায়ু বিজ্ঞানী জোশ ফিশার ও ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ রবার্ট বোগ।
নাসা বলেছে, উপগ্রহের মাধ্যমে আগ্নেয়গিরির ছাই ও সালফার ডাইঅক্সাইডের মতো গ্যাস শনাক্ত করা যায়, যা জলবায়ুর ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে এবং বিমান চলাচল ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হতে পারে। এই পর্যবেক্ষণ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বোঝাতেও সহায়ক।
মহাকাশ থেকে আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ বিজ্ঞানীদের ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন এবং আগ্নেয়গিরি ও বায়ুমণ্ডলের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে গভীর বোঝাপড়া গড়ে তুলতে সাহায্য করছে।
মিরাজ খান