
বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে, সংকট আর সংগ্রামের মুহূর্তে জাতির সামনে আলোর পথ দেখিয়েছে যে পরিবারটি, তাঁরা হলো জিয়া পরিবার। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী রাষ্ট্র পুনর্গঠন হোক কিংবা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গণতন্ত্র রক্ষায় আপসহীন সংগ্রাম—এই পরিবার বারবার হয়ে উঠেছে জাতির নির্ভরতার প্রতীক। সেই ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার আজ বহন করছেন তারেক রহমান।
জাতি যখন দিশেহারা, রাজনীতি যখন অচলাবস্থায়, আর গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ যখন অনিশ্চয়তার ঘনকালো মেঘে আচ্ছন্ন—ঠিক তখনই সেই মেঘ সরিয়ে আলোর প্রভা নিয়ে আবারও দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন তারেক রহমান। নির্বাচনকালীন অনিশ্চয়তা যখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছিল, তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক বৈঠক জাতিকে এনে দিয়েছে স্বস্তি, নির্ভরতা ও আশাবাদের বার্তা।
আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠককে শুধু স্বাগত জানাই না, বরং এটিকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় প্রারম্ভ বলেই মনে করি। এ বৈঠকে প্রতিফলিত হয়েছে দায়িত্বশীলতা, রাষ্ট্রনায়কসুলভ
বিবিধ প্রজ্ঞা এবং সংকট নিরসনে আলোচনার মর্যাদা—যা আজকের রাজনীতিতে বড়ই প্রয়োজন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল যার মূল প্রতিশ্রুতি—"সবার আগে বাংলাদেশ"—সেই ঐতিহ্য থেকেই দেশের দুই প্রজন্মের দুই প্রজ্ঞাবান নেতৃত্ব একত্রিত হলেন। তারা আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের পথ রচনা করলেন। সভ্য ও পরিণত গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির এই দৃষ্টান্ত রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায় সূচিত করল।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে জিয়া পরিবার সবসময় উন্নত বিশ্বের গণতান্ত্রিক আদর্শ অনুসরণ করে চলেছে। শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে বহুদলীয় গণতন্ত্রে ফিরিয়ে এনেছিলেন, আর দেশনেত্রী খালেদা জিয়া দেশের প্রতিটি ধ্বংসপ্রাপ্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনে অক্লান্ত সংগ্রাম করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায়, আজ তারেক রহমানও সেই উদার ও দায়িত্বশীল রাজনীতির উত্তরাধিকার বহন করছেন।
এই ঐতিহাসিক বৈঠক কেবল দুই ব্যক্তির সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ নয়, বরং ভবিষ্যতের বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার একটি ভিত। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সম্মান এবং আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সংকট নিরসনের যে বার্তা প্রফেসর ইউনূস এবং তারেক রহমান যুগপৎভাবে দিয়েছেন, তা এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত।
আমরা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি বরাবরই শ্রদ্ধাশীল। গ্রামীণ অর্থনীতিতে তাঁর অবদান আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, আর এই অগ্রযাত্রায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রশাসনিক ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর নোবেল বিজয়ের পেছনেও ছিল একটি রাষ্ট্রীয় সহযোগিতার প্রেক্ষাপট, যা আজও প্রশংসিত। জাতি আশা করে দেশ দ্রুতই আবার গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে যাব, মানুষ বুঝে পাবে রাষ্ট্রের মালিকানা।
আজ যখন জাতি আগামী পথচলার দিকনির্দেশনা খুঁজছে, তখন প্রয়োজন টেকসই নেতৃত্ব, সুসংগঠিত কৌশল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক শক্তি—এই তিনটির সমন্বয়। এই সমন্বয় একমাত্র দেখা যায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বিএনপির মধ্যেই। বৈষম্যহীন, আধুনিক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে গৃহীত সংস্কার পরিকল্পনা একমাত্র বাস্তবসম্মত ও কার্যকর পথ।
এই প্রেক্ষাপটে আবারও বলতে হয়—আগামী দিনের বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব তারেক রহমানকেই নিতে হবে। এটি কেবল রাজনৈতিক দাবি নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক দায়। জাতির ভবিষ্যৎ তাঁর সাহস, প্রজ্ঞা ও নেতৃত্বগুণের ওপর নির্ভরশীল। সত্যিই, বাংলার আকাশে যখন মেঘ জমে, তখনই জিয়া পরিবার বৃষ্টি হয়ে আসে—কালো মেঘ সরিয়ে, আলো নিয়ে।
লেখকঃ মাহবুব নাহিদ
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
রিফাত