ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

২০৫০ সালের মধ্যে ১৩ লাখ মানুষের মৃত্যুঝুঁকি, লিভার ক্যান্সার থেকে বাঁচতে করণীয়

প্রকাশিত: ০১:০০, ৩১ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০১:০১, ৩১ জুলাই ২০২৫

২০৫০ সালের মধ্যে ১৩ লাখ মানুষের মৃত্যুঝুঁকি, লিভার ক্যান্সার থেকে বাঁচতে করণীয়

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান প্রবণতা চলতে থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে—এমনই চমকে দেওয়া সতর্কবার্তা দিয়েছে দ্য ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণা।

গবেষণায় বলা হয়েছে, বর্তমানে বছরে প্রায় ৮ লাখ ৭০ হাজার মানুষ লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এই সংখ্যা আগামী কয়েক দশকের মধ্যে বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১৫ লাখ ২০ হাজারে। আর মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছাতে পারে ১৩ লাখ ৭০ হাজারে। বর্তমানে এটি বিশ্বের তৃতীয় সর্বাধিক প্রাণঘাতী ক্যান্সার।

প্রতিরোধযোগ্য অথচ অবহেলিত

গবেষকরা বলছেন, লিভার ক্যান্সারের অধিকাংশ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। যেমন:

– অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন

– ভাইরাসজনিত হেপাটাইটিস বি ও সি

– ওজনজনিত লিভারের রোগ (MASLD), যা মোটা বা ডায়াবেটিস আক্রান্তদের মাঝে বেশি দেখা যায়

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্যান্সারের প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রেই প্রতিরোধ সম্ভব সঠিক স্বাস্থ্যনীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে।

হেপাটাইটিস বি: টিকা দিলে জীবন রক্ষা সম্ভব

বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধে জন্মের পরই টিকা দেওয়া সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলেও, এখনও বিশ্বের অনেক দরিদ্র দেশেবিশেষ করে সাব-সাহারান আফ্রিকায় এই টিকা কাভারেজ খুবই কম।

গবেষকরা সতর্ক করেছেন, যদি এই টিকাদান হারে উন্নতি না হয়, তাহলে ২০১৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটিস বি-তে প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ মারা যেতে পারেন।

অ্যালকোহল ও স্থূলতা: আরও বড় হুমকি আসছে

গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে অ্যালকোহলজনিত লিভার ক্যান্সারের হার ২১ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি। আর স্থূলতাজনিত ফ্যাটি লিভার থেকে হওয়া ক্যান্সারের হারও ১১ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ায় বিশেষ সতর্কতার আহ্বান

গবেষকরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, স্থূলতা ও ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়া অঞ্চলে এই ঝুঁকি অত্যন্ত উচ্চ। তাই সচেতনতা বাড়ানো, আগেভাগে পরীক্ষা ও জীবনধারার পরিবর্তন এখনই প্রয়োজন।

বিশ্বব্যাপী সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ

গবেষক দলের সদস্যরা বলছেন, ‘লিভার ক্যান্সার এখন আর অবহেলার বিষয় নয়। এটি এক বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই এখনই সমন্বিত, ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করা দরকার—যা প্রতিরোধ, টিকাদান, সচেতনতা এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের ওপর জোর দেবে।’

 

সূত্র: এনডিটিভি।

রাকিব

×