
ছবি: সংগৃহীত
সপ্তাহে মাত্র দুইবার ডিম খাওয়ার অভ্যাস রাখতে পারলেই বয়সকালে অ্যালঝাইমারসহ স্মৃতিভ্রংশজনিত রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব, এমনটাই বলছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘The Journal of Nutrition’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ডিম খান, তাদের মধ্যে ৪৭ শতাংশের ক্ষেত্রে অ্যালঝাইমার রোগের আশঙ্কা কমে যায়। গবেষণায় ১,০০০ জন প্রবীণ ব্যক্তির ওপর প্রায় সাত বছর ধরে এই বিশ্লেষণ চালানো হয়।
গবেষণার গুরত্বপূর্ণ তথ্য:
অংশগ্রহণকারীদের গড় বয়স ছিল ৮১ বছর। যারা ডিম খান না, তাদের তুলনায় নিয়মিত ডিম খাওয়া ব্যক্তিদের অ্যালঝাইমারের ঝুঁকি অনেক কম ছিল। ব্রেইন অটপসিতে দেখা যায়, ডিম খাওয়া ব্যক্তিদের মস্তিষ্কে কম অ্যামিলয়েড প্লাক তৈরি হয়, যা অ্যালঝাইমার রোগের প্রধান কারণ।
ডিমে রয়েছে কোলিন নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ নিউট্রিয়েন্ট, যা ব্রেইনের জন্য অপরিহার্য। এই কোলিন থেকে তৈরি হয় অ্যাসিটাইলকোলিন, যা মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি ও চিন্তাশক্তি বজায় রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া ডিমে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কে প্রদাহ কমায় এবং লুটেইন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধে সহায়ক।
আগে ধারণা ছিল, ডিমের কুসুমে থাকা কোলেস্টেরল হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, সাপ্তাহিক ২টি ডিম খেলে স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না; বরং তা স্মৃতিশক্তি রক্ষায় উপকারী ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু ডিম খেলেই হবে না, সঙ্গে পালং শাক, ওমেগা-৩ যুক্ত মাছ, বাদাম ও বীজজাতীয় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়লে মস্তিষ্কের সার্বিক স্বাস্থ্য অনেক ভালো থাকবে।
অ্যালঝাইমার হলো এক ধরনের নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ, যা স্মৃতি, চিন্তাশক্তি ও আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে মস্তিষ্ককে ক্ষয় করে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই সহজলভ্য খাবারের মাধ্যমে প্রতিরোধের উপায় জানা অত্যন্ত জরুরি।
মুমু ২