ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০১ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

রংপুরে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু 

নির্বাচিত সরকার না থাকায় দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে

আব্দুস সালাম, রংপুর

প্রকাশিত: ২০:৪২, ৩১ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২০:৪৪, ৩১ জুলাই ২০২৫

নির্বাচিত সরকার না থাকায় দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীরা অপেক্ষা করছে নির্বাচনের জন্য। নির্বাচিত সরকার না থাকায় দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে। পদে পদে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। তাই সবাইকে শক্তিশালীভাবে বলতে হবে আমরা নির্বাচিত সরকার চাই, যারা জনগণের কাছে জবাব দেবে, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। অন্তর্বর্তী সরকারের তো জবাবদিহিতা নেই, তারা তো জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না।  
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি মিলনায়তনে ‘রংপুর বিভাগের অর্থনীতি পুনঃরুদ্ধার ও উন্নয়নের রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশে যে কোন সংস্কার, পরিবর্তন দেশের জনগণের সমর্থন নিয়ে করতে হবে। যে কোন সংস্কার, পরিবর্তন দেশের জনগণের সমর্থন নিয়ে করতে হবে। কোন বিশেষ গোষ্ঠি বা দলের চিন্তার মাধ্যমে পরিবর্তন আসলে তা টেকসই হবে না। আমরা কিছু মানুষ ঢাকায় বসে নিজেদের বিজ্ঞ মনে করে একটা সিদ্ধান্ত দিয়ে দেব সেটি গণতন্ত্র নয়, বরং সেটি গণতন্ত্র বিরোধী কার্যক্রম। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতে হলে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবর্তন আনতে হবে। যা সবচেয়ে বেশি টেকসই হবে। সেটাই আজকে বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্খা,ব্যবসায়ীদের আকাঙ্খা।

তিনি বলেন, আগামী ১৮ মাসের মধ্যে ১ কোটি চাকুরীর ব্যবস্থা করতে হবে, এটা আমাদের সিদ্ধান্ত। যার মধ্যে থাকবে দেশের চাকুরী, দেশের বাইরের চাকুরী, আত্মকর্মসংস্থান, আইসিটিভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কামার-কুমোরদের নতুনভাবে এগিয়ে নিতে হবে। হস্তশিল্পগুলোকে এগিয়ে নিতে আমরা কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা দেব। রপ্তানীযোগ্য সকল পণ্যের গার্মেন্টেসের সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি’র আমলে কখনও শেয়ারবাজার, ব্যাংক লুটপাট হয়নি। কারণ আমরা এসকল স্থানকে দলীয়করণ করিনি। গত ১৫ থেকে ১৭ বছর এসব দলীয়করণের জন্য হয়েছিল। আগামীতে যেন এমন না হয় এজন্য আমাদের আরও স্বচ্ছ হতে হবে, আরও প্রফেশনাল হতে হবে। এজন্য ব্যবসায়ীদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আপনাদের লিডারশীপ উন্নত করতে হবে। যারা ব্যবসায়ীদের নেতৃত্বে থাকবে তাদের যদি মান্নোয়ন না হয়, তাহলে পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে না।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচিত সরকার না হলে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ কেউ করবে না। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা তাদের সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছে নির্বাচনের অপেক্ষায়। এখানে বিদেশ থেকে যারা আসে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করে আপনাদের নির্বাচন কবে। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে তো কোনো ব্যবসায়ী বড় কমিটমেন্টে যাবে না। বিদেশী ব্যবসায়ীরা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে বিনিয়োগ করে। যা অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে হয় না। সুতরাং সবাই হাত তুলে বসে আছি, অপেক্ষা করছি নির্বাচনের জন্য।

তিনি বলেন, সরকার ও জনগণ এ সম্পর্কের সেতু হচ্ছে নির্বাচিত প্রতিনিধি। এই নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকার কারণে কেউ কাজ করছে না। পুলিশ কাজ করছে না, সরকারি কর্মকর্তারা কাজ করছে না, এজন্য আমি কাউকে দোষারোপ করছি না। আমি চাই বাংলাদেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। জনগণের মালিকানার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। যার জন্য আমরা গত ১৭ বছর যুদ্ধ করেছি, প্রাণ দিয়েছি, জেল খেটেছি। 

রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি এমদাদ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, লালমনিরহাট চেম্বারের প্রেসিডেন্ট শেখ আব্দুল হামিদ বাবু, কুড়িগ্রামের হোসাইন কায়কোবাদ, রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নুরুল ইসলাম পটু, উইমেন চেম্বারের প্রেসিডেন্ট শাহনাজ পারভীন শাহীন, বিশিষ্ট শিল্পপতি এমদাদ হোসেন ভরসা, রংপুর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব অ্যাড. মাহফুজ উন নবী ডন, রংপুর চেম্বারের সহ-সভাপতি মঞ্জুর আহমেদ আজাদ, এনামুল হক সোহেলসহ অন্যরা। মতবিনিময় সভায় রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ১০টি চেম্বার ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

 

রাজু

×