
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই হলো মেশিনের বুদ্ধিমত্তা, যা মানুষের বুদ্ধিমত্তার অনুকরণ তৈরি করা হয়। এটি মেশিনকে শেখা, যুক্তি করা, সমস্যা সমাধান করা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা এবং সৃজনশীল কাজ করার ক্ষমতা প্রদান করে। জন ম্যাকার্থিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জনক বলে মনে করা হয়। জন ম্যাকার্থি একজন আমেরিকার বিজানী ছিলেন। ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’ শব্দটি তিনি তৈরি করে ছিলেন। তিনি অ্যালান টুরিং, মারভিন মিস্কি, অ্যালেন নেওয়েল এবং হরিবার্ট এ সাইমনের সাথে কৃত্রিম প্রতিষ্ঠাতা।
দৈনন্দিন জীবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে একসঙ্গে হাজার হাজার কাজ দ্রæত করার পূশাপাশি খুব অল্প সময়ে নতুন অনেক বিষয় শিখতে পারে। আগের তথ্য বিশ্লেষণ করেই মূলত আগের বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবন-যাপনে অও অত্যপ্রত্য ভাবে জড়িয়ে আছে। সকালে ঘুম থেকে উঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত আমরা প্রতিনিয়ত অও ব্যবহার করে থাকি। বর্তমান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ছাড়া মানবজীবন অচল।
শিক্ষাক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
শিক্ষাক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমতার কথা আসলেই সবার প্রথমে চ্যাটজিপিটির কথা আসে। অনেক শিক্ষার্থীই চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে তাদের অ্যাসাইনমেন্ট বিনামূল্যে সম্পূন্ন করছে। যদিও এর নৈতিকতা নৈতিকতা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমৃতা ব্যবহার করে সাধারণ কাজ সম্পন্ন করতে বাঁধা থাকা উচিত না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার হতে পারে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে কোর্স সাজাতে, তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের সমাধান দিতে। এমনকি শিক্ষার্থীরা নিজেদের দুর্বলতা চিহ্নিত করে তার সমাধান করতে পারে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
চিকিৎসাক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমতার প্রয়োগের ধারণাটি বেশ পুরনো। কিন্তু বর্তমানে এর প্রয়োগ বেড়েছে। বর্তমানে বড় বড় অপারেশনসহ অনেক চিকিৎসায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বেড়েছে। নির্ভুল চিকিৎসাথ কৃত্রিম বুদ্ধিমতার গুরুত্ব অপরিসীম। রোগ শনাক্তকরণ, ঔষধের কার্যকারিতা অধিকতর দ্রæতকরণ, ব্যক্তিগত পর্যায়ে চিকিৎসাসহ ইত্যাদি পর্যায়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বেড়েছে।
মানব জীবনে বিরূপ প্রভাব
মানবজীবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব ভালো- খারাপ দুটোই আছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বেড়েছে বেকারত্ব। অও এর জন্য প্রতিদিন অনেক মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। দিন দিন সংখ্যা বাড়বে আরও। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মানবজীবন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সবে সবচেয়ে ক্ষতিকর ও মারাত্মক দিক হচ্ছে 'নিরাপত্তাহীনতা।
অও সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের উচিত কিছু নীতি তৈরি করা, যাতে করে সাধারণ মানুষ এর অপব্যবহার করতে না পারে। এ ব্যাপারে নিজ দেশের সরকারের আইটি ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, পুলিশ প্রশাসন এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সমন্বয়ে একটি আইন চালু করা উচিত। যাতে করে ভুক্তভোগীদের করা অভিযোগে অপরাধীকে দ্রæত আইনের আওতায় নিয়ে আসা যায়।
ভালো খারাপ সবকিছুতেই আছে। আমাদের উচিত ভালোটা গ্রহণ করে খারাপটা বর্জন করা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে মানবজীবনের কল্যান সাধন করা। সমস্যা সমাধান করা, শিক্ষণীয় কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার বৃদ্ধি করে মানবজীবনের কল্যাণ সাধন করা। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভালো ও কল্যাণকর দিক গুলো দিয়ে মানবজীবনে কল্যাণসাধন করা সম্ভব হবে।
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়