ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

লঞ্চ যাত্রায় আমরা যাত্রী, না জিম্মি

মুবাশ্বির আলম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

প্রকাশিত: ১৮:১৯, ৪ জুলাই ২০২৫

লঞ্চ যাত্রায় আমরা যাত্রী, না জিম্মি

নদীমাতৃক বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ প্রতিদিন নৌপথে চলাচল করেন। এর মধ্যে চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুট অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ রুট। এই রুটে প্রতিদিন হাজারো যাত্রী লঞ্চে যাতায়াত করেন, যা শুধু যাতায়াতের মাধ্যম নয় বরং নিরাপদ বিশ্রাম ও নির্ভরতার প্রতীকও বটে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই রুটসহ দেশের অন্যান্য নৌরুটেও যাত্রীরা নিয়মিতভাবে অনিয়মের মুখোমুখি হচ্ছেন। লঞ্চের ক্যান্টিনগুলোতে পণ্যের নির্ধারিত মূল্য মানা হয় না। ৫ টাকার বিস্কুট ১০ টাকায়, ১৫ টাকার পানি বা চানাচুর ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে নিয়মিতভাবে। যাত্রীরা দাম জানতে চাইলে ক্যান্টিন কর্মীদের রুক্ষ আচরণ ও তাচ্ছিল্য তাদের আরেকবার অপমানিত করে। মাঝনদীতে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীদের অসহায়ত্বকেই তারা পুঁজি করে মুনাফা লুটছে। সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয় হলো এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসনের তেমন কোনো কার্যকর তদারকি নেই। অভিযোগ জানালেও নেই প্রতিকার, ফলে দিন দিন এই অন্যায় আরও গভীরভাবে প্রথায় রূপ নিচ্ছে। এই পরিস্থিতির দ্রুত এবং স্থায়ী সমাধান অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য লঞ্চের ক্যান্টিনে প্রতিটি পণ্যের গায়ে নির্ধারিত মূল্য (MRP) লেখা বাধ্যতামূলক করতে হবে। প্রতিটি লঞ্চে যাত্রীদের অভিযোগ জানানোর নম্বর ও ব্যবস্থা দৃশ্যমানভাবে টানিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএ এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ তদারকি বাড়াতে হবে এবং নিয়মিত মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নিতে হবে। অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রির সঙ্গে যুক্তদের জরিমানা ও লাইসেন্স বাতিলের মতো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যাত্রীদের নিরাপদ, স্বচ্ছ ও ন্যায্য যাত্রা নিশ্চিত করতে হলে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া এই অনিয়ম বন্ধ করা সম্ভব নয়।

মুবাশ্বির আলম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া 

প্যানেল

×