ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

প্রসঙ্গ শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া

উর্মি আক্তার ঝিনুক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

প্রকাশিত: ১৮:২৬, ৪ জুলাই ২০২৫

প্রসঙ্গ শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সিজিপিএ সিস্টেমের পরিবর্তে অন্যান্য যোগ্যতাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বর্তমানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে সিজিপিএকে প্রধান মানদণ্ড হিসেবে ধরা হয়, যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। সিজিপিএ ভালো থাকা মানেই একজন প্রার্থীর ভালো শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা নেই, আবার সিজিপিএ কম থাকা মানেই তিনি অযোগ্য নন। তাই, প্রার্থীর একাডেমিক পারফরম্যান্সের পাশাপাশি তার গবেষণা অভিজ্ঞতা, শিক্ষাদানের দক্ষতা, যোগাযোগ দক্ষতা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক গুণাবলিও বিবেচনা করা উচিত। 
বর্তমানে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সিজিপিএর ওপর অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায়, ভালো সিজিপিএ থাকা সত্ত্বেও প্রার্থীর শিক্ষাদানের দক্ষতা বা গবেষণা অভিজ্ঞতা কম থাকতে পারে। আবার কারও সিজিপিএ হয়তো কিছুটা কম, কিন্তু তিনি হয়তো শিক্ষাদানে অনেক বেশি পারদর্শী বা তার গবেষণা অভিজ্ঞতা অনেক সমৃদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে, সিজিপিএর পাশাপাশি অন্য বিষয়গুলোও বিবেচনা করা প্রয়োজন। শিক্ষার গুণগতমান সিজিপিএ দিয়ে নির্ধারিত হয় না। যেমন অনেক সময় উচ্চ সিজিপিএধারীরা বাস্তব জ্ঞান, গবেষণা দক্ষতা বা ক্লাসরুম পরিচালনায় দুর্বল হন আবার কম সিজিপিএধারী কেউ গবেষণায় বা পাঠদানে চমৎকার হতে পারেন। আবার দেখা যায় এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩.৭৫ সিজিপিএ আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩.৫০ এর চেয়ে দুর্বল হতে পারে। ফলে এটি একটি তুলনামূলকভাবে অনির্ভরযোগ্য মানদণ্ড। অনেকে গবেষণায় খুব ভালো করলেও শুধু কম সিজিপিএ থাকার কারণে প্রাথমিক ধাপেই বাদ পড়ে যান, যা এক ধরনের মেধার অপচয়। 
আমার মতে, শিক্ষকতার মূল গুণ হলো বিশ্লেষণ, যুক্তি, গবেষণা ও পাঠদানের দক্ষতা। সিজিপিএ এই গুণগুলো প্রতিফলিত করে না। তাই সিজিপিএ পুরোপুরি বাদ না দিয়ে বরং এটি একটি উপাদান হিসেবে রেখে লিখিত পরীক্ষা, মক লেকচার বাধ্যতামূলক করা, গবেষণা ও প্রকাশনার মান যাচাই, সাক্ষাৎকার বোর্ডে সাবজেক্ট বিশেষজ্ঞ রাখা এবং আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়ে সিজিপিএ দক্ষতা স্ট্যান্ডার্ডজেশন করা। শুধু সিজিপিএ ভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়া শিক্ষকতার জন্য উপযোগী নয় বরং দরকার মিশ্র মূল্যায়ন পদ্ধতি যেখানে সিজিপিএকে উপাদান হিসেবে রেখে বাস্তব অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় তা অধিক ন্যায্য ও কার্যকর।

উর্মি আক্তার ঝিনুক 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

প্যানেল

×