
একটা সময় বইয়ের কদর ছিল খুব। কিন্তু কালের পরিক্রমায় মানুষ বইকে ভুলতে বসেছে। তরুণ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা একসময় মানুষের বানানো কাল্পনিক গল্প শোনে আনন্দ পেত খুব। কিন্তু হাতের নাগালে এখন বই থাকলেও এখন বাস্তবিক গল্প পড়তে ইচ্ছুক না। আমাদের দেশে বিয়ের অনুষ্ঠান, জন্মদিনে অথবা কারও বিশেষ কোন দিনে টাকা, আর আসবাবপত্র উপহার দেওয়া যেন একটি বিশেষ নিয়ম হয়ে গেছে। অথচ আমাদের জ্ঞানী হওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল মূল্যবান উপহার বইটি। কিন্তু কালের পরিক্রমায় বই উপহার যেন আজ বিলুপ্তির পথে। ২৩ মে আন্তর্জাতিক বই দিবসের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে কোন দেশ বই পড়ার দিক দিয়ে এগিয়ে আছে সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৩ তম। প্রবাদ আছে যে জাতি যত শিক্ষিত, সেই জাতি তত উন্নত। তবুও আমরা বই স্পর্শ করতে ভয় পাই। তথ্য-প্রযুক্তি এআই আর স্মার্টফোন যেন আমাদের দিনের দিন বেসামাল করে দিচ্ছে। অথচ একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণীজন বইয়ের ফেরিওয়ালা পলান সরকার রাজশাহীর প্রত্যন্ত অঞ্চলের ২০টির গ্রামে বই পড়ার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের ৫৫০টিরও বেশি পাঠাগারের নিজস্ব উদ্যোগে বই বিলি করছেন বইবন্ধু নামে পাঠাগারপ্রেমীদের কাছে সুপরিচিত ব্যক্তি কাজী এমদাদুল হক খোকন। মানুষের কাছে বই পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অবদানও অসীম। আমরা মনে করি বাঙালি জাতিকে আরও সুশিক্ষিত করার লক্ষ্যে বই পড়ার আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি। আরও বেশি জরুরি গ্রামে গ্রামে পাঠাগার তৈরি করে মানুষকে বই পড়ার জন্য আহ্বান জানানো। বই-ই পারে মানুষকে অসভ্য থেকে সভ্য জাতিতে রূপান্তরিত করতে। মানুষ বই উপহার দেওয়ার প্রচলন তৈরি করবে এবং বই পড়ায় মনোযোগী হবে সেটাই প্রত্যাশা।
মো. হারুন মিয়া
গৌরীপুর, ময়মনসিংহ
প্যানেল