
ছবি: সংগৃহীত
টানা ১২ দিনের তীব্র সংঘাত শেষে অবশেষে যুদ্ধবিরোতিতে পৌঁছেছে ইরান ও ইসরাইল। তবে এই সংঘাত ঘিরে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। ইসরাইলি প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইসরাইল হাইয়ম এক বিস্ফোরক দাবি করেছে—সংঘাত চলাকালে মুসলিম দেশ সৌদি আরব গোপনে সহযোগিতা করেছে ইসরাইলকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকাশ্যে ইরানের পক্ষ নেওয়ার ভান করলেও বাস্তবে রিয়াদ নাকি হেলিকপ্টার পাঠিয়ে ইরানের ছোড়া ড্রোন ঠেকাতে সাহায্য করেছে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরাইলি বাহিনীকে। ইরান থেকে উৎক্ষেপিত ড্রোনগুলো প্রতিহত করতে জর্ডান ও ইরাকের আকাশসীমায় পরিচালিত অভিযানে সৌদি আরবের সক্রিয় ভূমিকা ছিল বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রকাশ্য অবস্থান এবং গোপন ভূমিকায় স্পষ্ট দ্বিচারিতা লক্ষ্য করা গেছে সৌদি নেতৃত্বে। মুখে ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানালেও বাস্তবে রিয়াদ তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করে ইরানবিরোধী কার্যক্রমে সাহায্য করেছে বলে অভিযোগ। এতে প্রশ্ন উঠেছে—এই দ্বৈত অবস্থানই কি মুসলিম ভ্রাতৃত্বের পরিচয়?
শুধু সৌদি আরবই নয়, প্রতিবেদনটিতে জর্ডান ও ইরাকের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইরানের ছোড়া ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে মূলত এই দুই দেশের আকাশসীমায়। অথচ এই তিনটি দেশই মুসলিম প্রধান এবং দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এসেছে।
এদিকে, গাজায় টানা ২১ মাসের ইসরাইলি বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৭,১৩০ ফিলিস্তিনি, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩৪ হাজারেরও বেশি। এই মানবিক বিপর্যয়ের মাঝেও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে দেখা যায়নি কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ। বরং কূটনৈতিক বিবৃতি ও শীতল নীরবতার আড়ালেই থেকেছে দেশটি।
এই পরিস্থিতিতে ইরান একাই বর্বর ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। অথচ একইসঙ্গে গোপনে সেই ইরানকেই দুর্বল করতে ইসরাইলকে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে সৌদিসহ আশেপাশের কয়েকটি মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে এ বিষয়ে সৌদি আরব এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
ছামিয়া