
অধ্যাপক দেওয়ান মো. নকিবুল হুদা বলেন “আজ বাংলাদেশ এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে, যেখানে জনগণ পরিবর্তনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। দেশে ন্যায়বিচার নেই, শাসনের নামে চলছে দুর্বৃত্তায়ন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও দমননীতি। আমরা এই অন্ধকার থেকে জাতিকে আলোর পথে নিতে চাই।
আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট—এমন একটি সমাজ গঠন, যেখানে বৈষম্য থাকবে না, অন্যায়ের জায়গা থাকবে না। ইসলামি মূল্যবোধ হবে রাষ্ট্রের চালিকাশক্তি, আর প্রতিটি নাগরিক পাবে তার ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা।
দাঁড়িপাল্লা প্রতীক আমাদের আদর্শের প্রতীক—এটি ইনসাফ, শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতার প্রতীক। এই প্রতীকের বিজয় মানে শুধু একটি দলের জয় নয়, বরং একটি শোষিত জাতির জাগরণ। ইনশাআল্লাহ, জনগণই এবার ইতিহাস সৃষ্টি করবে। আমরা শাসক নয়—আমরা সেবক হতে চাই। ভোট দিয়ে জনগণ এই আন্দোলনে সঙ্গী হলে আমরা প্রমাণ করবো, কীভাবে ন্যায়ের ভিত্তিতে একটি রাষ্ট্র পরিচালিত হয়।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ছলিমাবাদ ইউনিয়ন শাখার আয়োজনে গণসংযোগ ও দাওয়াতী সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (০৪ জুলাই) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ছলিমাবাদ ইউনিয়ন শাখার আয়োজনে উপজেলা মডেল মসজিদ মোড় থেকে ছলিমাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গণসংযোগ ও দাওয়াতী সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মুফতি আলাউদ্দিন সাদীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী অধ্যাপক দেওয়ান মো. নকিবুল হুদা।
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আমির কাজী মো. আবুল বাশার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক মো. মহসিন, উপজেলা সেক্রেটারি মো. শামীম নূর ইসলামসহ জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মো. মহসিন বলেন “আমরা রাজনীতি করি ক্ষমতার জন্য নয়, আদর্শের জন্য। এই আদর্শের পথ কতটা কণ্টকাকীর্ণ—তা আপনাদের সামনেই প্রমাণ। আমি ১৪ বার কারাগারে গেয়েছি, শুধু সত্য বলার এবং ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে থাকার অপরাধে। গত ১২ তারিখ এই বাজার থেকেই আমাকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও আমি ভাঙিনি। আমি ফিরে এসেছি, কারণ আমি জানি—এই জাতিকে অন্ধকার থেকে মুক্ত করার সংগ্রাম এখনই সবচেয়ে জরুরি। ইতিহাসের চাকা ঘুরছে, এবং এই জনগণই শিগগিরই তাদের রায় দিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। আমরা শুধু প্রতিশ্রুতি দিতে আসিনি—আমরা জীবন দিয়ে প্রমাণ করতে এসেছি, যে ইসলামী সমাজ গঠনের সংগ্রাম থেমে থাকবে না।”
মো. শামীম নূর ইসলাম বলেন “আমরা এমন একটি সমাজ গড়তে চাই, যেখানে নারীকে শুধুই ‘ভোটার’ হিসেবে নয়, বরং সম্মানিত মানবসম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ফ্যাসিস্ট সরকার নারী উন্নয়নের নামে যা করেছে, তা লোকদেখানো—একদিকে উন্নয়নের কথা বলে, অন্যদিকে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী নারীদের জন্য এমন একটি সমাজ গড়তে চায়, যেখানে তারা হবে শিক্ষিত, আত্মনির্ভরশীল, এবং সমাজগঠনে সক্রিয় অংশীদার। ইসলামি নীতিমালার আলোকে আমরা নারীর মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় সর্বোচ্চ অঙ্গীকারবদ্ধ। এটা আমরা কথা নয়, কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে চাই—নারী কখনো দুর্বল নয়, তারা জাতির অগ্রগতির অন্যতম চালিকাশক্তি। আপনারা দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দিয়ে জামায়াতকে রাষ্ট্রক্ষমতা দিলে নারীদের মর্যাদা ও ক্ষমতা হবে রাষ্ট্রীয় নীতির অন্যতম স্তম্ভ।”
উপজেলা আমির কাজী মো. আবুল বাশার বলেন “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেবল একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি আদর্শিক বিপ্লবের নাম—যাকে ধ্বংস করতে বারবার ষড়যন্ত্র করেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা। হাসিনা জানে, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে এদেশে লুটপাট থেমে যাবে, ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ হবে, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও দুঃশাসনের অবসান ঘটবে। তাই আমাদের হাজারো নেতা-কর্মীর ওপর চালানো হয়েছে অমানবিক নির্যাতন। মিথ্যা মামলা, জেল-জুলুম, পুলিশি হামলা এমনকি আমাদের নেতা-কর্মী ফাঁসিও দিয়েছে। আমরা জানি, এই পথ সহজ নয়। কিন্তু আমরা আদর্শের লড়াইয়ে পিছপা হইনি। তারা ভয় পায় জামায়াতকে, কারণ তারা জানে—জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি করে হাত ঘষে খাওয়া যাবে না, চাইলেই মদের আসর বসানো যাবে না, রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাৎ করা যাবে না। এ কারণেই তারা আঁতকে ওঠে জামায়াতের নাম শুনলেই।
আমরা এসেছি সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বদলে দিতে। ইনশাআল্লাহ, জনগণের রায়েই এই পরিবর্তন নিশ্চিত হবে।”
Jahan