
গাজায় গত ২১ মাসে ইসরাইলের নিক্ষেপ করা বোমার পরিমাণ ৮৫ হাজার টন বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রানচেসকা আলবানিজ। ইসরাইলে অস্ত্র সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি বলেন, এসব কোম্পানির সহায়তায় গত ২১ মাসে গাজায় ৮৫ হাজার টন বোমা নিক্ষেপ করেছে ইসরাইল। এই পরিমাণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমায় ফেলা বোমার চেয়ে ছয়গুণ বেশি। গাজায় আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর গণহত্যার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেন তিনি। খবর আলজাজিরার।
আলবানিজ ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনকে একটি মৃত্যুফাঁদ হিসেবে নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন- ক্ষুধার্ত, বোমাবর্ষণকারী এবং ক্ষীণকায় জনগোষ্ঠীকে হত্যা বা পালিয়ে যেতে বাধ্য করার জন্য এটি তৈরি করা হয়েছে। যুদ্ধবিরতি নিয়ে জোর আলোচনার মধ্যেও গাজায় বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা চালায় ইসরাইলি সেনারা। এতে হতাহত হন বেশ কয়েকজন। এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হামলা চলে দক্ষিণাঞ্চলের শহর খান ইউনিসেও। এদিকে গাজায় গণহত্যা চালানোর জন্য মানুষকে অনাহারে রাখাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরাইল। এমন মন্তব্যই করেছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, বোমাবর্ষণ, বাস্তুচ্যুতি, খাদ্য, পানি ও ওষুধের সংকট সব মিলিয়ে অঞ্চলটিতে মানবিক বিপর্যয় এখন চরমে। সহায়তা নিতে গিয়ে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত বা আহত হয়েছেন। অনেক ক্ষুধার্ত মানুষ ইসরাইল পরিচালিত হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের ফাঁদে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছেন। বাস্তবতা হলো, গাজার ২৩ লাখ মানুষ পুরোপুরি ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল। আর ত্রাণ আসে ইসরাইল হয়ে। গাজার প্রায় সকলেই ঘরছাড়া হয়েছিলেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজার ৫৭ হাজার মানুষ মারা গেছেন। গত মে মাসের সমীক্ষা অনুসারে ৯৩ শতাংশ মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছেন।
প্যানেল