ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

মুহাররম মাসে করণীয় ও বর্জনীয়: কী বলছে কোরআন ও হাদিস

প্রকাশিত: ২১:৫৮, ৪ জুলাই ২০২৫

মুহাররম মাসে করণীয় ও বর্জনীয়: কী বলছে কোরআন ও হাদিস

ছবি: সংগৃহীত।

আরবি হিজরী সনের প্রথম মাস মুহাররম, ইসলামী ক্যালেন্ডারে এক পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ সময়। কোরআনের সূরা তাওবার ৩৬ নম্বর আয়াত অনুযায়ী, আল্লাহ তাআলা বছরকে ১২ মাসে বিভক্ত করেছেন, যার মধ্যে চারটি মাসকে "নিষিদ্ধ" বা সম্মানিত বলা হয়েছে—জিলকদ, জিলহজ, মুহাররম ও রজব। এ সময় অন্যায়-অত্যাচার, যুদ্ধ-বিগ্রহ পরিহারের নির্দেশ রয়েছে।

মুহাররম মাসের ১০ তারিখকে বলা হয় ‘আশুরা’। এটি ইসলামী ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এই দিনে একাধিক ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, যেমন—

  • আদম (আ.)-এর তাওবা কবুল

  • ইউনুস (আ.)-এর মাছের পেট থেকে মুক্তি

  • নূহ (আ.)-এর নৌকার পাহাড়ে নোঙর

  • মূসা (আ.)-এর ফেরাউনের জুলুম থেকে মুক্তি

  • হোসাইন (রা.)-এর কারবালায় শাহাদাত

এই দিনটিতে রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও রোজা রাখতেন এবং সাহাবাদের দুই দিন—৯ ও ১০ অথবা ১০ ও ১১ মুহাররম—রোজা রাখার নির্দেশ দেন, যাতে ইহুদি জাতির সাথে সাদৃশ্য না হয়। পরবর্তীতে রমজানের রোজা ফরজ হলে আশুরার রোজা নফল হিসেবে পরিগণিত হয়, তবে তা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।

ইসলামি স্কলারদের মতে, আশুরার দিন রোজা, দোয়া ও তাওবা ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা উত্তম। তবে সমাজে প্রচলিত কিছু শোকানুষ্ঠান যেমন 'হাই হোসেন' মাতম, তাজিয়া মিছিল বা শরীর আঘাত করা ইত্যাদি শরীয়তসম্মত নয়। এগুলো বিদআত ও শিরক হিসেবে বিবেচিত।

এছাড়াও এই মাসে বিয়ে না করা, বিশেষ রঙের কাপড় পরিধান কিংবা বিশেষ খাবার এড়ানো—এসব কুসংস্কারেরও ইসলাম ধর্মে কোন ভিত্তি নেই।

মুহাররম ও আশুরা যেন হয় ইবাদতের মাস, বিদআতের নয়—এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমাদের পালন করা উচিত। মহান আল্লাহ তাআলা যেন আমাদেরকে সঠিক জ্ঞান ও হেদায়েত দান করেন—আমিন।

নুসরাত

×