ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

আশুরার দিন মহানবী (সা.) যেসব আমল করতেন

প্রকাশিত: ১০:১০, ৪ জুলাই ২০২৫

আশুরার দিন মহানবী (সা.) যেসব আমল করতেন

ছবি: সংগৃহীত।

আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য বিশেষ কিছু সময় ও মৌসুম দিয়েছেন যে সময়ে বান্দা অধিক ইবাদত ও ভালো কাজ করে সহজেই আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারে। মুমিনের জন্য এটা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত। অতীতে ঘটে যাওয়া ছোট-বড় গুনাহসমূহ মার্জনা করানোর সুবর্ণ সুযোগ বটে। এই বরকতময় সময়ের মধ্য থেকে একটি হচ্ছে, ‘মহররম ও আশুরা’।

আল্লাহ তাআলা বিশেষ মর্যাদার কারণেই এ মাসের নামকরণ করেছেন ‘মহররম’।

ফজিলতপূর্ণ এই দিনে বিশেষ দুটি আমল আছে। এক. রোজা রাখা। দুই. তাওবা ও ইস্তিগফার পাঠ করা।

হাদিস শরিফে এ দুটি আমল সম্পর্কে বিশেষ ফজিলতের কথাও এসেছে। এই দিনে রোজা রাখার ফজিলত প্রসঙ্গে আল্লাহর নবী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে আমি আশা পোষণ করি যে তিনি আশুরার রোজার মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের (সগিরা গুনাহ) ক্ষমা করে দেবেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৭৫২)

এমনকি মদিনার শিশুরা পর্যন্ত এই দিনে রোজা রাখার অভ্যাস করেছে।

রুবায়্যি বিনতে মুআব্বিজ (রা.) বলেন, আমরা ওই দিন রোজা রাখতাম এবং আমাদের শিশুদের রোজা রাখাতাম। আমরা তাদের জন্য পশমের খেলনা তৈরি করে দিতাম। তাদের কেউ খাবারের জন্য কাঁদলে তাকে ওই খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতাম। আর এভাবেই ইফতারের সময় হয়ে যেত। (বুখারি, হাদিস : ১৯৬০)

আর এই দিনে রোজা রাখার উত্তম পদ্ধতি হলো, ১০ মহররমের সঙ্গে ৯ বা ১১ মহররম মিলিয়ে দুটি রোজা রাখা। ৯ তারিখে রাখতে পারলে ভালো। কারণ হাদিসে ৯ তারিখের কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) যখন আশুরার রোজা রাখছিলেন এবং অন্যদের রোজা রাখতে বলেছিলেন তখন সাহাবারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, এ দিনকে তো ইহুদি-নাসারারা সম্মান করে? তখন নবীজি (সা.) এ কথা শুনে বলেন, ইনশাআল্লাহ, আগামী বছর আমরা নবম তারিখেও রোজা রাখব। বর্ণনাকারী বললেন, এখনো আগামী বছর আসেনি, এ অবস্থায় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকাল হয়ে যায়। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৫৬)

এ জন্য ইবনে আব্বাস (রা.) বলতেন, তোমরা ৯ তারিখ এবং ১০ তারিখ রোজা রাখো এবং ইয়াহুদিদের বিরোধিতা করো। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৫৫)

এ দিনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো বেশি পরিমাণে আল্লাহর কাছে তাওবা-ইস্তিগফার করা। কেননা বান্দার জন্য এ দিন তাওবার পরিবেশ সম্পূর্ণ অনুকূল থাকে। তাই বুদ্ধিমানদের উচিত তাওবা কবুলের প্রত্যাশিত এ দিনের কদর করা।

এ প্রসঙ্গে হাদিস শরিফে এসেছে, একবার এক সাহাবি নবীজির কাছে জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), রমজানের পর আপনি কোন মাসে রোজা রাখতে বলেন? নবীজি (সা.) বললেন, তুমি যদি রমজানের পর রোজা রাখতে চাও তাহলে মহররমে রোজা রাখো। কেননা মহররম হচ্ছে আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন এক দিন আছে, যেদিন আল্লাহ তাআলা (অতীতে) অনেকের তাওবা কবুল করেছেন। ভবিষ্যতেও অনেকের তাওবা কবুল করবেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৪১)

নুসরাত

×