
ছবি: সংগৃহীত
নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রাইমারিতে বিপুল ভোটে জয় পেয়ে ইতিহাস গড়েছেন মুসলিম, দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত প্রার্থী জোহরান মামদানি—যিনি নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হলে হবেন নিউ ইয়র্কের প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং দক্ষিণ এশীয় মেয়র।
তবে তার এই উত্থান প্রশংসার পাশাপাশি ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী মহলে ব্যাপক ক্ষোভও সৃষ্টি করেছে, যা প্রকাশ পেয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভারতীয় মিডিয়ায় ইসলামবিদ্বেষী এবং জাতিগত মন্তব্যে। মামদানি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতা, বাবরি মসজিদ ধ্বংস, গুজরাট দাঙ্গা এবং ভারতীয় মুসলিমদের দমন-পীড়ন নিয়ে কথা বলার কারণে বিজেপি ও প্রবাসী হিন্দু দক্ষিণপন্থীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন।
বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাউত তাকে "ভারতীয় কম, পাকিস্তানি বেশি" বলেও কটাক্ষ করেন এবং ‘আজ তক’সহ প্রভাবশালী হিন্দু জাতীয়তাবাদী মিডিয়াগুলো তার বিরুদ্ধে ‘ভারতবিরোধী’ তহবিল গ্রহণের অভিযোগ তোলে। এমনকি একটি প্রবাসী ভারতীয় গোষ্ঠী ‘ইন্ডিয়ান আমেরিকানস ফর কুয়োমো’ প্লেন ভাড়া করে নিউ ইয়র্ক শহরের আকাশে “Save NYC from Global Intifada. Reject Mamdani” লেখা ব্যানার ওড়ায়। যদিও এসব হামলার মূল কারণ মামদানির ধর্মীয় পরিচয়—তিনি একজন মুসলিম, আফ্রিকান এবং গুজরাটি মুসলিম পরিবারের সন্তান—তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পেছনে রয়েছে ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার স্মৃতি রাজনীতিভিত্তিকভাবে ব্যবস্থাপনার চেষ্টাও।
মামদানি নির্বাচনী প্রচারণায় নিউ ইয়র্কের হিন্দু, মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় শ্রমজীবী জনগণের কাছে তার পরিচয় ও বিশ্বাসকে গর্বের সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন, দুর্গা মন্দিরে গিয়েছেন, দীপাবলিকে রাষ্ট্রীয় ছুটি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আইন প্রস্তাব করেছেন এবং স্পষ্ট করেছেন যে তিনি মোদির মতো একজন ‘যুদ্ধাপরাধীর’ সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন না। এমন সাহসী অবস্থানই তাঁকে মুসলিম, প্রগতিশীল এবং প্রান্তিক দক্ষিণ এশীয় আমেরিকানদের কাছে জনপ্রিয় করেছে এবং বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প-পরবর্তী আমলে তার এই জয় হিন্দুত্ববাদীদের জন্য এক বড় বার্তা।
শিহাব