
ছবি: প্রতীকী
মাত্র একটি সিগারেট থেকেই ভয়াবহ দাবানলে পুড়ে গেছে গ্রিসের চিওস দ্বীপের ১০ হাজার একরের বেশি বনভূমি ও চারণভূমি। গত রোববার শুরু হওয়া এই আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে ধ্বংস করে দিয়েছে গাছপালা, প্রাণীজগত ও মানুষের বসতি।
বুধবার আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনো শত শত দমকলকর্মী আগুন পুনরায় ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কাজ করে যাচ্ছেন। আগুন লাগানোর সন্দেহে মঙ্গলবার রাতে এক জর্জিয়ান নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে একটি সিগারেট ফেলতে দেখেন, যেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়।
এই ঘটনায় যখন চিওস দ্বীপ এখনো সামলে উঠতে পারেনি, তখনই বুধবার বিকেলে গ্রিসের আরেকটি দ্বীপে নতুন করে দাবানল দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার দমকল বিভাগ জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে এবং স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে দাবানলের কবলে পড়েছে ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশ। গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ ক্রিটে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ আগুন। প্রায় তিন হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিছু ঘরবাড়ি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ক্রিট দ্বীপে ২৩০ জন দমকলকর্মী ও ৩৮টি ইঞ্জিন কাজ করছে আগুন নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া হালকিদিকি এলাকায়ও নতুন করে আগুন ছড়িয়েছে, যেখানে ১৬০ জন কর্মী ও ৪৯টি ট্রাক আগুন নেভানোর কাজে অংশ নিয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, তীব্র ঝড়ো হাওয়া আগুন নিয়ন্ত্রণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও আবার নতুন করে জ্বলে উঠছে, ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে।
রাজধানী এথেন্স থেকে অতিরিক্ত সহায়তা পাঠানো হয়েছে আগুন নেভাতে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এবারের দাবানল আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
গ্রিসের বাইরেও দাবানলে বিপর্যস্ত ইউরোপ। জার্মানির সাক্সনি রাজ্যের এক বনভূমিতে আগুনে গুরুতর আহত হয়েছেন দুইজন, শতাধিক মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্পেনের কাতালোনিয়া অঞ্চলে দাবানলে প্রাণ হারিয়েছেন দুইজন কৃষক, পুড়ে গেছে ১৬ হাজার একরের বেশি জমি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে স্পেনে দাবানল শুরু হয় এবং বুধবার তা আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। ছাই ও ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলী ৪৫ হাজার ফুট ওপরে ছড়িয়ে পড়ে। এটি কাতালোনিয়ায় রেকর্ড করা অন্যতম বড় দাবানল বলে জানিয়েছে সেখানকার ফায়ার সার্ভিস।
চলতি বছর ইউরোপজুড়ে তীব্র তাপদাহ ও খরার কারণে দাবানলের সংখ্যা ও ভয়াবহতা বেড়েই চলেছে, যা জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নিয়ে এসেছে।
এম.কে.