
ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা সংক্রান্ত সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রপতির এমন ক্ষমতা রয়েছে যে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকেও সরকারের অনুরোধে তিনি ক্ষমা করে দিতে পারেন। তার ভাষায়, “আমরা দেখেছি, আওয়ামী লীগের সময় এমন ২৭ বা ২৮ জনকে ক্ষমা করা হয়েছে— এমনকি একজনকে দু’বারও।”
ব্যারিস্টার ফুয়াদ প্রশ্ন তোলেন, “একদিকে সংবিধান বলছে, আপনি খুনের বিচার পাবেন, ইনসাফ পাবেন—এটা আপনার মৌলিক অধিকার। আবার সংবিধানের ৪৮(৩) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতির খুনিকে ক্ষমা করার এখতিয়ারও রাখা হয়েছে। তাহলে কি আমরা এমন রাষ্ট্র চাই, যেখানে খুনির জন্য মুক্তির পথ তৈরি থাকে?”
এমন পরিস্থিতিতে, ব্যারিস্টার ফুয়াদ সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন— "তাহলে কি আমরা ঐ রাষ্ট্র চাই কি না, যেখানে খুনের আসামি খালাস পাওয়ার জায়গায় থাকে?"
তিনি বলেন, "এটা হচ্ছে ৪৯-এর এসেন্স।"
রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতা কোথায় গিয়ে ঠেকে—তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ হুবহু তুলে ধরেন:
"৪৯-এ যেটা বলেছে, সেটা হচ্ছে—বাংলাদেশের যেকোনো আদালত, যেকোনো ট্রাইব্যুনাল, যেকোনো বিচারিক প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত, দণ্ড, সাজা মওকুফ করার ক্ষমতা আমার দেশের রাষ্ট্রপতির থাকবে।"
বিকল্প প্রস্তাবনা:
ব্যারিস্টার ফুয়াদ চৌধুরী দাবি করেন, খুনের মতো গুরুতর অপরাধে রাষ্ট্রপতির এ ধরনের ক্ষমতা থাকা উচিত নয়। বরং মাফ করার অধিকার থাকা উচিত নিহত ব্যক্তির পরিবার কিংবা ক্ষতিগ্রস্তদের, তবে সেটিও নির্দিষ্ট ‘ন্যায়বিচার কমিশন’ গঠন করে হওয়া উচিত।
২৪ সালের ঘটনা তুলে ধরে প্রশ্ন:
২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে কিছু অফিসার-কমান্ডারের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ টেনে ফুয়াদ বলেন,"এখন ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে যেসকল কমান্ডার, অফিসার খুন করেছেন, তাদের সাজা হলো, ২ বছর পর আবার তাকে ক্ষমা করে দিলে, সে কি খুনির মায়ের সাথে বসে আলাপ করবে?"
এ সময় তিনি দেশে আইন ও সুশাসনের ভারসাম্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এবং বলেন, “একটি ন্যায্য রাষ্ট্র গঠনে সংবিধানে থাকা ধারা ও বাস্তব চর্চার মধ্যে সামঞ্জস্য থাকা জরুরি।”
Mily