ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২

কখন হাঁটতে যাওয়া সবচেয়ে ভালো? জানুন সকাল ও সন্ধ্যায় হাঁটার স্বাস্থ্য উপকারিতা

প্রকাশিত: ১৭:১৭, ৫ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৭:১৮, ৫ জুলাই ২০২৫

কখন হাঁটতে যাওয়া সবচেয়ে ভালো? জানুন সকাল ও সন্ধ্যায় হাঁটার স্বাস্থ্য উপকারিতা

ছবি: সংগৃহীত।

ফিট থাকার দৌড়ে হাঁটা হতে পারে আপনার সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকর বন্ধু। নিয়মিত হাঁটা শুধু ওজন কমাতে সাহায্য করে না, বরং ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা জীবনধর্মী রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে। তবে প্রশ্ন হলো—সকাল না সন্ধ্যা, কখন হাঁটলে শরীরের উপকার সবচেয়ে বেশি?

বিশেষজ্ঞদের মতে, হাঁটা যেকোনো সময়ই শরীরের জন্য ভালো। তবে আপনার সময়, জীবনধারা ও শরীরের শক্তি অনুযায়ী সকালে হাঁটা এবং সন্ধ্যায় হাঁটার আলাদা কিছু উপকারিতা রয়েছে।

সকালের হাঁটার উপকারিতা:
বিষয়টি শুধু শরীর নয়, মনকেও জাগিয়ে তোলে। সকালে হাঁটলে শরীরের বিপাকক্রিয়া (মেটাবলিজম) বেড়ে যায়, যা সারা দিন ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া সকালে রোদে হাঁটলে শরীর ভিটামিন ডি পায়, যা হাড় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

শরীরকে চনমনে করে: সকালের হাঁটা মনকে সতেজ করে তোলে এবং সারা দিনের জন্য ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে।

ভালো ঘুমে সাহায্য করে: সকালে রোদের আলো ঘুম ও জাগরণ চক্রকে (সারকাডিয়ান রিদম) নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

মেজাজ ভালো রাখে: হাঁটার সময় শরীরে এন্ডরফিন নিঃসৃত হয়, যা মন ভালো করে এবং মানসিক চাপ কমায়।

বিভ্রান্তি কম: সকালবেলা কাজের ঝক্কি কম থাকায় হাঁটাকে অভ্যাসে পরিণত করা সহজ হয়।

সন্ধ্যায় হাঁটার উপকারিতা:
ব্যস্ত দিনের শেষে মানসিক প্রশান্তি আর হজমের সহায়তা—এই দুই-ই মেলে সন্ধ্যার হাঁটায়।

চাপ কমায়: সারাদিনের মানসিক চাপ দূর করে সন্ধ্যার হাঁটা।

পেশির কার্যক্ষমতা বাড়ে: সন্ধ্যার দিকে শরীরের পেশি তুলনামূলকভাবে বেশি সক্রিয় থাকে, যা শারীরিক পারফরম্যান্স উন্নত করতে সাহায্য করে।

পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো: সন্ধ্যায় হাঁটার সময় প্রিয়জনদের সঙ্গে কাটালে মানসিক প্রশান্তি ও সামাজিক সংযোগ তৈরি হয়।

পরিচ্ছন্ন বাতাস: সন্ধ্যার বাতাস তুলনামূলকভাবে কম দূষিত, যা ফুসফুসের জন্য উপকারী।

হজম ভালো হয়: রাতের খাবারের পর হালকা হাঁটা হজমে সহায়তা করে এবং গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা কমায়।

শরীর বেশি নমনীয় থাকে: সন্ধ্যায় শরীর বেশি নমনীয় থাকে, ফলে তুলনামূলক বেশি সময় ও দ্রুত গতিতে হাঁটা সম্ভব।

স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে এবং ওজন কমাতে কিছু কার্যকর হাঁটার টিপস:
দ্রুত হাঁটুন: এমন গতিতে হাঁটুন যাতে কথা বলা যায়, কিন্তু হাঁটার স্পিড থাকে কিছুটা বেশি।

সময় নির্ধারণ করুন: সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন, প্রতিদিন ৩০–৪৫ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করুন।

ইন্টারভাল ওয়াকিং: মাঝেমধ্যে হাঁটার গতি বাড়ান ও কমান—এতে ক্যালোরি বার্ন বাড়ে।

খাদ্যাভ্যাসের যত্ন নিন: হাঁটার সঙ্গে সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। হাঁটার আগে ও পরে পানি পান করুন।

সঠিক জুতা পরুন: আরামদায়ক ও সাপোর্টিভ জুতা ব্যবহার করুন, যেন হাঁটার সময় পা বা হাঁটুতে ব্যথা না হয়।

অ্যাপ বা ফিটনেস ট্র্যাকার ব্যবহার করুন: হাঁটার অগ্রগতি ট্র্যাক করতে সাহায্য করবে, যা অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়ক।

সকালে হোক বা সন্ধ্যায়, প্রতিদিন হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি শুধু শরীর নয়, মনেরও যত্ন নেয়। নিজেকে সক্রিয় ও সুস্থ রাখতে, আজ থেকেই শুরু করুন হাঁটা!

মিরাজ খান

×