ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২

অর্থপাচার ঠেকানোর সুফল মিলছে সার্বিকভাবে, স্বস্তির এক অর্থবছর পার করলো বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৭:০১, ৫ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৭:০২, ৫ জুলাই ২০২৫

অর্থপাচার ঠেকানোর সুফল মিলছে সার্বিকভাবে, স্বস্তির এক অর্থবছর পার করলো বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

ডলার সংকট, টাকার অবমূল্যায়ন এবং প্রবাসী আয়ের ভাটার মতো একাধিক চ্যালেঞ্জ নিয়েই শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ অর্থনীতির সর্বশেষ অর্থবছর। ব্যয় ছিল আয়ের চেয়ে বেশি, ফলে ক্ষয় হচ্ছিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।

কিন্তু রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং সঠিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ফলে বছর শেষে বাংলাদেশ পেয়েছে এক আশাব্যঞ্জক অর্জন। রেমিটেন্স এবং রপ্তানির ইতিবাচক ধারায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ অর্থনীতি এখন অনেকটাই স্বস্তিদায়ক অবস্থানে।

 

২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষদিকে এসে রেমিটেন্স আয় ছাড়িয়েছে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, অর্থপাচার ও হুন্ডি কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানো উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

“ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং প্রায় শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে,”—বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এই রেমিটেন্স আয় বাংলাদেশের নাম তুলে দিতে পারে বিশ্বে শীর্ষ পাঁচ রেমিটেন্স গ্রহণকারী দেশের তালিকায়।

 

 

শ্রম অস্থিরতা, জ্বালানি সংকট, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ও ভারতের বিধিনিষেধ—বছরজুড়ে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও রপ্তানি আয় বেড়েছে ৫.৫ শতাংশ।
ফলে অর্থবছর শেষে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

অন্যদিকে, আমদানি ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ বিলিয়ন ডলারে। তবে আয় ও ব্যয়ের এই ব্যবধান সত্ত্বেও লেনদেন ভারসাম্য দীর্ঘদিন পর ইতিবাচক হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

 

অর্থবছরের শুরুতে ডলার সংকটে অস্থির হয়ে উঠেছিল বাজার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত সংস্কার, বিশেষ করে মে মাসে মুদ্রা বিনিময় হার ব্যবস্থায় নতুন সংস্কার আনার পর বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসে।

“ডলারের মূল্য হঠাৎ করে বড় ধরনের বৃদ্ধি পায়নি। ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে,”—অর্থনীতিবিদদের অভিমত।

এক সময় দুশ্চিন্তার বড় কারণ হয়ে ওঠা বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ২২.৪৮ শতাংশ। এতে রিজার্ভ পরিস্থিতিও শক্তিশালী হয়েছে।

 

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এই ইতিবাচক ধারাকে টিকিয়ে রাখতে হবে দীর্ঘমেয়াদে। এর জন্য শুধু আয় বাড়ানো নয়, উন্নত আর স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনাও জরুরি।

“রেমিটেন্স ও রপ্তানিতে এই গতি ধরে রাখতে পারলে বৈদেশিক অর্থনীতি হবে আরও মজবুত,”—বিশেষজ্ঞ মতামত।

ছামিয়া

×