ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

চাঁপাইনবাবগঞ্জে হত্যার দায়ে আ’লীগ নেতাদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:০৫, ৫ জুলাই ২০২৫

চাঁপাইনবাবগঞ্জে হত্যার দায়ে আ’লীগ নেতাদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক মাহিন্দ্রা চালককে পিটিয়ে হত্যার দায়ে জড়িত স্থানীয় আ.লীগ নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকেলে গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের আড্ডা-শেরপুর গ্রামে এই বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন হয়েছে।

আড্ডা-শেরপুর এলাকাবাসীর আয়োজনে আড্ডা বাজার থেকে একটি মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। এরআগে আড্ডা বাজারে নিহতের পরিবার ও স্বজনদেরকে হত্যা মামলার আসামী আ.লীগ নেতাদের প্রাণনাশের হুমকি ও সুষ্ঠ বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রাতের অন্ধকারে একজন সাধারণ মাহিন্দ্রা চালককে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে নেয়ামতপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোতালিব হোসেন বাবারের নেতৃত্বে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয় আ.লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী। এছাড়াও হত্যার পরদিন ১১টি দোকান ও বাড়ি থেকে গরু-ছাগল লুটপাট করে হত্যাকারীরা। হত্যাকান্ডের এক বছর পেরিয়ে গেলেও পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণের কারনে অপরাধী এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে। আদালতে চার্জশিট দিচ্ছে না সিআইডি। উল্টো এখনও আসামীরা নানারকম ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে নিহতের পরিবারের সদস্যদের। 

নিহত মাহিন্দ্রা চালক জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী আসমা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে হত্যার পরে আত্বীয় স্বজনদের বাড়িতে ব্যাপক লুটপাট ও হামলা চালায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। স্বামী মারা যাবার পরে উল্টো আমারই বাড়ির বাইরে বের হতে পারিনি। পালিয়ে থাকতে হয়েছে। এখনও আমাদেরকে নানারকমভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আরেকদিকে পুলিশও পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। আমরা এই হত্যাকান্ড ও লুটপাটের বিচার চাই। 

নিহত জয়নাল আবেদীনের ভাই শাহিন আলী বলেন, হত্যা মামলায় থানা পুলিশ উৎকোচ নিয়ে ৩৫ জন আসামীর মধ্যে ৯ জনকে বাদ দিয়ে আদালতে চার্জশিট দেয়। পরে আদালতে আবেদন করলে সিআইডিকে পুনরায় তদন্তভার দেয় আদালত। কিন্তু ১০ মাস হয়ে গেলেও সিআইডি এখনও চার্জশিট দেয়নি। এদিকে, এলাকায় তারা এখনও নানারকম ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। 

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম, যুবদল কর্মী হাবিবুর রহমান, নিয়ামতপুর উপজেলার রসুনপুর ইউনিয়নের ০২ নম্বর বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম, নিহত জয়নাল আবেদীনের ভাই শাহিন আলী, স্ত্রী আসমা বেগম, ছোট ভাইয়ের বউ সাবিনা খাতুন, স্থানীয় ব্যক্তি তোফাজ্জল হকসহ অন্যান্যরা। 

গত বছরের ২৪ মার্চ রাত সাড়ে আটটার দিকে শেরপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার ফসলী জমিতে নিয়ে গিয়ে মাহিন্দ্রা চালক জয়নাল আবেদিনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে আ.লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৩০-৩৫ জন নেতাকর্মী। দুইদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন জয়নাল আবেদিন। নিহত জয়নাল আবেদীন শেরপুর গ্রামের মাহবুবুর রহমানের ছেলে।

 

রাজু

×