
ছবি: সংগৃহীত
ইরান-ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান যুদ্ধবিরতির আবহে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম। বিশেষ করে, মার্কিন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইরানের প্রধান তিন পারমাণবিক স্থাপনা—ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানে—সংরক্ষিত ইউরেনিয়াম নিয়ে ঘনীভূত হয়েছে প্রশ্ন। এসব স্থাপনায় থাকা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কী ধ্বংস হয়ে গেছে, না কি আগেই গোপনে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে—তা নিয়ে ধোঁয়াশা ও উৎকণ্ঠা উভয়ই দেখা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, হামলার ফলে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে তাঁর এ বক্তব্য নিয়ে সন্দিহান আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)। সংস্থাটির মতে, এসব স্থাপনায় কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও নির্ভরযোগ্যভাবে নিরূপণ করা যায়নি। বিশেষ করে ফোরদো স্থাপনাটি পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত হওয়ায় সেখানে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ আরও কঠিন।
IAEA মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি জানিয়েছেন, ফোরদোর ভেতরে থাকা উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন সেন্ট্রিফিউজ মেশিনগুলো হামলায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে। তিনি আরও জানান, ইরানের মজুদ করা নয় টনের বেশি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মধ্যে প্রায় ৪০০ কেজি ছিল এমন মাত্রায়, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উপযোগী। তবে এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম ধ্বংস হয়েছে কিনা—তা এখনো নিশ্চিত নয়।
তথ্য বিশ্লেষক ও পারমাণবিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, হামলার আগে ফোরদো স্থাপনার বাইরে ট্রাক ও বিভিন্ন যানবাহনের চলাচলের আলামত পাওয়া গেছে স্যাটেলাইট চিত্রে। এ থেকেই ধারণা করা হচ্ছে, ইরান হয়তো গুরুত্বপূর্ণ ইউরেনিয়াম মজুদ অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সামান্য পরিমাণ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম হিসাবের বাইরে থাকলেও সেটি হতে পারে একটি দেশের পরমাণু সক্ষমতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে ইরানের এসব মজুদের ভবিষ্যৎ অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
এই মুহূর্তে বড় প্রশ্ন—ইরান কি হামলার আগেই ইউরেনিয়াম সরিয়ে ফেলেছে, নাকি তা সত্যিই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে? সেই উত্তর সময়ই দেবে, তবে উত্তেজনা কমার বদলে নতুন করে বাড়ছে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=NLFyXgi1rb0
রাকিব