
ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া রাশিয়া কার্যত বিশ্ব থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে দেশটির ভেতর থেকে নিরপেক্ষ সংবাদপ্রবাহ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, বাড়ছে ভিন্নমত দমন, গ্রেফতার ও বিচারের ঘটনা। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার ১১ জন রাজনৈতিক বন্দি বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন, যা প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
চিঠিতে তারা জানান, ‘আমরা রাশিয়ার রাজনৈতিক বন্দিরা বিশ্বের সমস্ত নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—যারা বিশ্বাস ও মূল্যবোধের কারণে নির্যাতনের শিকার মানুষদের কথা ভাবেন এবং গুরুত্ব দেন, তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, রাশিয়াজুড়ে কমপক্ষে এক লাখ রাজনৈতিক বন্দি ও ইউক্রেনীয় বেসামরিক জিম্মি রয়েছেন, যাদের অপরাধ একটাই—‘জনগণের পক্ষ নেওয়া’।
চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, রাশিয়ায় এখন আর ন্যায়বিচার বা ন্যায্যতার কোনো জায়গা নেই। কেউ সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার সাহস দেখালেই তাকে জেলে যেতে হয়।
প্রতিবাদী কণ্ঠকে চেপে ধরতে একের পর এক আইন:
চিঠির লেখকদের মতে, ২০১২ সাল থেকে রাশিয়ায় যেকোনো ভিন্নমত দমন করার লক্ষ্যে একের পর এক কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
- ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে পাস হয়েছে কমপক্ষে ৫০টি দমনমূলক আইন
- ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারির পর থেকে আরও ৬০টির বেশি আইন কার্যকর করা হয়েছে
চিঠিতে আরও অভিযোগ করা হয়:
- রাশিয়ায় মানবাধিকার সংগঠনগুলো কার্যত নিষ্ক্রিয়
- কারাবন্দিদের স্বাস্থ্য ও জীবনের ঝুঁকি থাকলেও সেগুলোর কোনো তদন্ত বা বিচার হয় না
- রাজনৈতিক বন্দিদের রাখা হয় কঠোর পরিস্থিতিতে, প্যারোল বা জামিনের সুযোগও দেওয়া হয় না
তবে এত কিছু সত্ত্বেও নিজেদের প্রতিবাদী অবস্থান থেকে সরে আসেননি বলেই জানিয়ে দিয়েছেন এই ১১ কারাবন্দি। তারা লিখেছেন, ‘আমরা এখনো আমাদের কণ্ঠ হারাইনি, নাগরিক হিসেবে আমাদের অবস্থান দৃঢ়ভাবে ধরে রেখেছি।’
পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন বন্দিরা:
১. রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উভয় পক্ষকে “সবার বিনিময়ে সবাই’ সূত্রে যুদ্ধবন্দি ও বেসামরিক জিম্মিদের, বিশেষ করে ইউক্রেনীয়দের মুক্তি দিতে হবে।
২. কারাগারে মৃত্যুর মুখে থাকা অসুস্থ রাজনৈতিক বন্দিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
৩. রাশিয়ায় রাজনৈতিক কারণে নিপীড়িতদের মুক্তির পথ তৈরি করতে বিশ্ব রাজনীতিকদের উদ্যোগ নিতে হবে।
৪. স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াইরত রাশিয়ান নাগরিকদের সংগ্রাম আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানানো হয়েছে।
৫. রাশিয়ানদের সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জানিয়ে গণতান্ত্রিক দেশগুলোর পার্লামেন্ট ও রাজনৈতিক দলগুলোকে রেজোলিউশন গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=1Qt07VE40iI
রাকিব