
সম্পাদকীয়
শত দিনের কর্মপরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছেন পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। তার স্মার্ট পরিকল্পনা জনমনে চমক জাগানোর মতো। তিনি বলেছেন, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, পানিদূষণ, প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ এবং পাহাড় কাটা রোধে অংশীজনদের পরামর্শ নিয়ে সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা উদারচিত্তে নবগঠিত মন্ত্রিসভার এই সদস্যকে সাধুবাদ জানাই। তার জন্য নিশ্চয়ই শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের শতভাগ শুভকামনা থাকবে।
পরপর দুদিন দুটি তাৎপর্যপূর্ণ সভা করেছেন পরিবেশমন্ত্রী। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রীর প্রথম কর্মদিবসে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় পরিবেশমন্ত্রী নানা পরিকল্পনার কথা বলেছেন দৃঢ়তা ও স্বপ্ন নিয়ে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার এবং মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করার কথাও বলেছেন।
টেকসই উন্নয়ন, বন দখল রোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা হবে। আন্তর্জাতিক অর্থছাড়ের চেষ্টা করা হবে। যে কথাটি দেশবাসীর বিশেষ প্রশংসা পাবে বলে ধারণা করি, সেটি হলো- তিনি বলছেন, মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করা হবে। দায়িত্ব পালনে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি বা তদবির গ্রহণযোগ্য হবে না। সুশাসনের জন্য এটাই চাই। সকল মন্ত্রীর পরিকল্পনা ও কাজে অনুরূপ অঙ্গীকারের প্রতিফলনই দেখতে চায় দেশের মানুষ।
ঢাকার চারপাশসহ সারাদেশের নদ-নদী দূষণ ও জলাধার ভরাট প্রতিরোধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ড্রোন ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি শিল্পকারখানার ‘তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার’ (ইটিপি) কার্যকরভাবে চালু রাখতে স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে অনলাইন মনিটরিং করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশমন্ত্রী। সারাদেশে বহু নদনদী দখল-দূষণে বিপর্যস্ত।
নদীমাতৃক দেশের জননীস্বরূপ শত নদীকে দখলমুক্ত করা, দখলদারদের আইনের আওতায় আনা এবং দূষণ রোধে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে বাস্তবায়নÑ এসবই দুঃসাধ্য হলেও করা সম্ভব। দশকের পর দশক যে অনিয়ম ও দুর্নীতি চলেছে, এসব ক্ষেত্রে তার ডালপালা ছেঁটে ফেলা সহজ নয়। তবে মন্ত্রী আন্তরিকভাবে চাইলে কী না সম্ভব! দেশটাকে বাঁচাতে হবে। নদীগুলোর প্রাণ রক্ষা করা চাই। এই কর্মযজ্ঞে মন্ত্রীর অকুতোভয় দূরদর্শী নেতৃত্ব প্রত্যাশা করে মানুষ।
সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সুস্থ পরিবেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ’ এই স্লোগান বাস্তবায়নে আগামী ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জাতীয় সেবা মাধ্যমে ‘৩৩৩’ নম্বরের সঙ্গে অন্য ডিজিট যুক্ত করে ফোনের মাধ্যমে অভিযোগ বা তথ্য দেওয়ার পদ্ধতি চালুর জন্য আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ চলছে।
পরিবেশ সুরক্ষা, বনাঞ্চল সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে আগামী দিনগুলোয় জাতি সুখবর পাওয়ার প্রত্যাশা করে। আশা করা যায়, সাবের হোসেন চৌধুরী আমাদের নিরাশ করবেন না।