ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

জেফরি এপস্টেইনের জন্মদিনে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বিল ক্লিনটনও

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ২৫ জুলাই ২০২৫

জেফরি এপস্টেইনের জন্মদিনে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বিল ক্লিনটনও

ছবি: সংগৃহীত

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের (WSJ) এক চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুখ্যাত মার্কিন যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টেইনের ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে তৈরি একটি বিশেষ এলবামে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের হাতে লেখা একটি চিঠি ছিল। ওই এলবামটি তৈরি হয়েছিল ২০০৩ সালে, এপস্টেইনের সাবেক প্রেমিকা ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্বাবধানে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন যাতে এপস্টেইনের প্রভাবশালী বন্ধু ও নামী মানুষরা তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যক্তিগত বার্তা দেন। WSJ জানায়, এলবামটিতে ক্লিনটনের পাশাপাশি ডোনাল্ড ট্রাম্প, বিলিয়নিয়ার লিয়ন ব্ল্যাক, ডিজাইনার ভেরা ওয়াং এবং মিডিয়া টাইকুন মর্ট জাকারম্যানসহ প্রায় ৬০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি তাদের বার্তা পাঠিয়েছিলেন।

চিঠিটিতে ক্লিনটন এপস্টেইনের 'শিশুসুলভ কৌতূহল' এবং দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের প্রশংসা করেন। চিঠির ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি লেখেন, "এটা স্বস্তিদায়ক, তাই না, এত বছর ধরে শেখা, জানা, অভিযান পার করে টিকে থাকা, আর সেই সঙ্গে আছে তোমার শিশুসুলভ কৌতূহল, পার্থক্য গড়ার ইচ্ছা এবং বন্ধুদের সঙ্গ।"

এই এলবামটি তৈরি করা হয়েছিল ২০০৬ সালে এপস্টেইনের প্রথম গ্রেপ্তারের আগেই। WSJ আরও জানায়, এলবামটির একটি পাতায় ক্লিনটনের নিজ হাতে লেখা এই এক প্যারাগ্রাফ সংরক্ষিত ছিল।

এছাড়া, ২০১9 সালে ক্লিনটনের মুখপাত্র স্বীকার করেন যে, সাবেক প্রেসিডেন্ট চারবার এপস্টেইনের ব্যক্তিগত জেটে ভ্রমণ করেন এবং একবার নিউ ইয়র্কের তার টাউনহাউজে যান, তবে সবই ছিল ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের কাজ সংক্রান্ত, এবং প্রতিবারই তিনি সিক্রেট সার্ভিস টিমসহ ছিলেন।

ক্লিনটনের নাম বহুবার এপস্টেইনের সঙ্গে যুক্ত হলেও তিনি কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হননি। তবে এপস্টেইনের বাড়িতে একটি বিতর্কিত ছবি ঝোলানো ছিল, যেখানে ক্লিনটনকে নীল পোশাক ও লাল হিল পরে দেখা যায়, যা বহু আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এদিকে, একই এলবামে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও একটি বিতর্কিত চিঠি ছিল বলে দাবি করেছে WSJ, যেখানে একটি অশ্লীল স্কেচ ও যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা রয়েছে। যদিও ট্রাম্প চিঠিটি লেখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং প্রতিবেদন প্রকাশের পর WSJ-র বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলারের মানহানি মামলা দায়ের করেছেন।

জেফরি এপস্টেইন ছিলেন একজন মার্কিন ধনী ব্যবসায়ী ও হেজ ফান্ড ম্যানেজার, যিনি মূলত কিশোরী মেয়েদের যৌন নিপীড়ন ও পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে বিশ্বজুড়ে কুখ্যাতি অর্জন করেন। নিউ ইয়র্কে জন্ম নেওয়া এপস্টেইন ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে তার অপরাধমূলক কার্যকলাপ চালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন কাজে বাধ্য করতেন এবং অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন। তিনি তার ব্যক্তিগত দ্বীপ “লিটল সেন্ট জেমস”–এ বহুবার এই ধরনের অপরাধ ঘটিয়েছেন বলে তদন্তে উঠে আসে। ২০১৯ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর জেল হেফাজতেই তার মৃত্যু হয়, যা আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মহত্যা বলা হলেও, তা নিয়ে এখনো নানা প্রশ্ন ও ষড়যন্ত্রতত্ত্ব রয়েছে। এপস্টেইনের কেলেঙ্কারি যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থা ও ধনী-ক্ষমতাবানদের দায়মুক্তির সংস্কৃতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।

মুমু ২

আরো পড়ুন  

×