
ছবি: প্রতীকী
যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪ সালে প্রতি নারীর গড় সন্তান জন্মদানের সংখ্যা ১.৬ এর নিচে নেমে এসে ইতিহাসে সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত সরকারি এক প্রতিবেদনএ এ তথ্য জানানো হয়।
একসময় যুক্তরাষ্ট্রে জন্মহার ছিল প্রায় ২.১। তবে গত দুই দশক ধরে জন্মহার ক্রমান্বয়ে কমে আসছে, কারণ অনেক নারী সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে দেরি করছেন বা সন্তানই নিতে চান না।
সম্প্রতি জন্মহারের পতনে উদ্বিগ্ন হয়ে, ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, যেমন ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) সুবিধা বাড়ানো, খরচ কমানোর জন্য নির্বাহী আদেশ জারি করা এবং ‘বেবি বোনাস’ চালু করার প্রস্তাব, যা দম্পতিদের সন্তান গ্রহণে উৎসাহিত করতে পারে।
তবে কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যা ও প্রজনন নীতিবিষয়ক গবেষক লেসবি রুট বলছেন, উদ্বেগ করার কিছু নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা এটিকে দীর্ঘমেয়াদী প্রজনন বিলম্বের অংশ হিসেবে দেখছি। যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা এখনও বাড়ছে এবং প্রাকৃতিক বৃদ্ধিও রয়েছে—জন্মের সংখ্যা মৃত্যুর চেয়ে বেশি।’
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) জাতীয় স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান কেন্দ্র ২০২৪ সালের সম্পূর্ণ জন্মহার সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।
১৯৬০ এর দশকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের মোট জন্মহার ছিল প্রায় ৩.৫, যা ১৯৭৬ সালে কমে দাঁড়ায় ১.৭, এরপর ২০০৭ সালে ধীরে ধীরে বেড়ে ২.১-এ পৌঁছে, কিন্তু এরপর আবার পতন শুরু হয়। ২০২৩ সালে এই হার ছিল ১.৬২১, আর ২০২৪ সালে সামান্য কমে ১.৫৯৯ হয়েছে।
প্রায় সব বয়সী মহিলার ক্ষেত্রে জন্মহার কমছে এবং এ অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে জানান নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্যারিনা গুজ্জো। তিনি জানান, লোকজন দেরিতে বিয়ে করছে এবং সন্তানের জন্য আর্থিক, স্বাস্থ্য বীমা ও অন্যান্য সুরক্ষার বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
ট্রাম্প প্রশাসনের জন্মহার বাড়ানোর প্রচেষ্টা সম্পর্কে গুজ্জো বলেন, ‘এগুলো প্রতীকী পদক্ষেপ মাত্র, যা প্রকৃতভাবে আমেরিকানদের জন্য কার্যকর হবে না।’
সিডিসির নতুন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে জন্মের সংখ্যা ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, অর্থাৎ প্রায় ৩৩,০০০ জন বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে, যা মোট ৩.৬ মিলিয়নেরও বেশি।
তবে আগের আনুমানিক তথ্যের তুলনায় বয়সের কিছু গোষ্ঠীতে জন্মহার কমেছে। বিশেষ করে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী মহিলাদের ক্ষেত্রে জন্মহার কমে গেছে, এবং ৩০-এর উপরের মহিলাদের ক্ষেত্রে তা অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিডিসির কর্মকর্তারা বলছেন, এটা জনসংখ্যার নতুন হিসাবনিকাশ এবং জনগণনার পরিসংখ্যানের পরিবর্তনের কারণে হয়েছে। অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কিছু বয়সী গোষ্ঠীর জন্মসংখ্যার সামান্য বৃদ্ধি হলেও মোট জনসংখ্যার বৃদ্ধির কারণে জন্মহার কম দেখাচ্ছে।
সূত্র: এপি।
রাকিব