
ছবি: সংগৃহীত
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আগুন ও ব্যাপক ভাঙচুরের শিকার হওয়া রাজধানীর গুলিস্তানে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি দীর্ঘ এক বছর পর আবারো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১০ তলা বিশিষ্ট এই ভবনটি ২০১৮ সালের ২৩ জুন উদ্বোধন করেছিলেন দলের সভাপতি ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি ছিল দলটির রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু।
আন্দোলনের সময় ভবনটিতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। এই এক বছরে ভবনটিকে ঘিরে নানান গুজব, কর্মকাণ্ড এবং রাজনৈতিক জটিলতা তৈরি হয়। অবশেষে ২৪ জুলাই (বুধবার) থেকে শুরু হয়েছে ভবন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সংস্কারের কাজ।
সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে ভবনের সামনে টাঙানো হয়েছে দুটি ব্যানার—‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম গবেষণা ইনস্টিটিউট’ এবং ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’। ব্যানার টাঙানোর পর বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া এবং নতুন করে বিতর্ক।
বর্তমানে ভবনের সংস্কার কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা কর্মীরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এটি “জুলাই যোদ্ধাদের” একটি সংগঠনের হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। তাদের দাবি, এই ভবনটি এক সময় “ফ্যাসিজম এবং গণহত্যার পরিকল্পনা কেন্দ্র” হিসেবে ব্যবহৃত হতো, তাই এটিকে এখন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের চিন্তা করা হচ্ছে।
তারা বলেন, এখানে “বাংলাদেশে গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদের ইতিহাস, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের ভূমিকা” নিয়ে গবেষণা ও তথ্যভিত্তিক কাজ হবে। ভবিষ্যতে এই ভবনটি "জুলাই যোদ্ধাদের" সংগঠনকে হস্তান্তরের কথাও আলোচনায় এসেছে। তবে এখনো সরকারিভাবে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি শুধুই ভবন সংস্কার নয়—এর পেছনে একটি রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে। ফ্যাসিজমবিরোধী ব্যানার টাঙিয়ে ভবনটি দখল বা পুনঃব্যবহারের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। কেউ কেউ বলছেন, এটি বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া একটি প্রতীকী প্রচেষ্টা।
এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে দলটির ঘনিষ্ঠ মহলে এই সংস্কার ও ব্যানার লাগানোকে ‘প্ররোচনামূলক’ এবং ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ছামিয়া